দেশে জাল সনদে চাকরি করা সহস্রাধিক শিক্ষকের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে জানায়, ১,১৫৬ জন শিক্ষক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জাল সনদে কর্মরত আছেন। এর মধ্যে ৭৯৩ জনের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ, ২৯৬ জনের কম্পিউটার শিক্ষার সনদ এবং ৬৭ জনের বিএড ও অন্যান্য বিষয়ে সনদ জাল।
গত বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ২০২ জন জাল সনদধারী শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করে। তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে সাতটি ব্যবস্থা, যার মধ্যে রয়েছে বেতন-ভাতার সরকারি অংশ (এমপিও) বাতিল করা। অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের মাধ্যমে ফৌজদারি মামলা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করে আসা এসব শিক্ষক জাল সনদে সরকারের কাছ থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা বেতন উত্তোলন করেছেন। তাদেরকে এই অর্থ সরকারি কোষাগারে ফিরিয়ে দিতে হবে। এর আগে, ১৮ মে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৬৭৮ জন শিক্ষককে শনাক্ত করে এবং তাদের বেতন-ভাতা বন্ধের নির্দেশ দেয়। যদিও সেই নির্দেশের পরও মাউশি কিছু শিক্ষকের বেতন ছাড় করেছে।
দেশে বর্তমানে এমপিওভুক্ত প্রায় ৩৪ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে কর্মরত ৪ লাখ শিক্ষক ও ১ লাখ কর্মচারী সরকারি বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা গুরুত্ব পাচ্ছে।
ডিআইএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে ২৯ জন, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ১০ জন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ১০০ জন এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ১৭ জন শিক্ষক জাল সনদ নিয়ে চাকরি করছেন। এসব ঘটনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাল সনদে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে নতুন করে তদন্ত এবং ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাত দফা কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, জাল সনদধারীদের এমপিও বন্ধ, অবৈধভাবে গ্রহণকৃত বেতন ফেরত নেওয়া, অবসর সুবিধা বাতিল করা, এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠানো।
এ পরিস্থিতি শিক্ষাক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারী নির্দেশনা জারি হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।