শ্রমিকদের বেতন দেয়নি, শাস্তির মুখে ৩৭০ কারখানা
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সরকার নির্ধারিত ১৬ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ না করায় সারাদেশে ৩৭০টি কলকারখানা শাস্তির মুখে পড়ছে। বেতন-ভাতা পরিশোধ না করা এসব কারখানার তালিকা শনিবার (১৮ এপ্রিল) কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর থেকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধে ব্যর্থ কলকারখানার একটি তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। শ্রম আইন অনুযায়ী এসব কলকারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলা দায়ের, লাইসেন্স নবায়ন স্থগিতসহ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত সচিব) শিবনাথ রায় স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ১৬ এপ্রিলের মধ্যে যেসব কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানের মালিক শ্রমিকদের মজুরি ও বেতন-ভাতা পরিশোধে ব্যর্থ হবেন সেই সব কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করার জন্য উপমহাপরিদর্শকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
‘ওই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার ঢাকা জেলা থেকে ১২২টি, গাজীপুর জেলা থেকে ১২০টি, নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে ৩০টি, চট্টগ্রাম জেলা থেকে ৫৮টি, পাবনা জেলা থেকে ৩টি, নরসিংদী জেলা থেকে ৬টি, ময়মনসিংহ জেলা থেকে ১১টি, মুন্সিগঞ্জ জেলা থেকে ১টি, দিনাজপুর জেলা থেকে ৩টি, রংপুর জেলা থেকে ২টি, কুমিল্লা জেলা থেকে ৫টি, ফরিদপুর জেলা থেকে ৪টি, রাজশাহী জেলা থেকে ২টি, খুলনা জেলা থেকে ৩টিসহ সর্বমোট ৩৭০টি কলকারখানার মালিক ১৬ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকদের মজুরি ও বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে তালিকা পাঠিয়েছেন উপমহাপরিদর্শকরা।’
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল সব শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন ১৬ এপ্রিলের মধ্যেই পরিশোধের জন্য মালিকদের নির্দেশ দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। এ নির্দেশ না মানলে সংশ্লিষ্ট মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে সরকার প্রথমে গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে করোনা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হলে তিন দফায় ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
পূর্ববর্তী মাসের বেতন-ভাতা চলতি মাসের সাত কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধের আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাকশিল্প মালিক সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মার্চের বেতন-ভাতাদি পরিশোধের সময়সীমা ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে কোনো কোনো কারখানার মালিক এ সময়ের মধ্যে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য পদক্ষেপ নেননি। এতে শ্রমিকরা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে বেতন-ভাতার দাবিতে বিভিন্ন স্থানে মহাসড়ক ও কারখানার গেটে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করে।
গতকাল শুক্রবার পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তৈরি পোশাক খাতের ২১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ শ্রমিক মার্চ মাসের বেতন পেয়েছেন, যা বিজিএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত শ্রমিকদের ৮৭ শতাংশ।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।