করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপনে সরকারের উদ্যোগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এলাকাবাসী। আতঙ্কিত এলাকাবাসী মনে করছে, আবাসিক এলাকায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপিত হলে স্থানীয়রা ঝুঁকিতে পড়বেন।এলাকার প্রায় শতাধিক লোকজন শুক্রবার (২০ মার্চ) সকাল থেকে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। দুপুর পর্যন্ত চলছিল তাদের কর্মসূচি।
করোনাভাইরাসে সন্দেহভাজনদের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টর এলাকার দিয়াবাড়িতে রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের ভবনে সেন্টার স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কুঞ্জলতা নামের ওই কম্পাউন্ডের ৪টি ভবনের মোট ৩৩৬টি ফ্ল্যাট কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।কিন্তু এখানে কোয়ারেন্টাইন স্থাপনের সিদ্ধান্তের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে এলাকাবাসী বলছেন, আবাসিক এলাকায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। এর ফলে এখানে বসবাসরত প্রায় ৩ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়বেন।
এ বিষয়ে ডিএমপির তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল মোত্তাকিন জানান, প্রায় শতাধিক লোক অবস্থান নিয়ে এখানে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার না করার দাবি জানাচ্ছেন। আমরা তাদের বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করছি।গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। এতে সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১০ হাজার ৪৮ জন। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৮ হাজার ৪৩৭ জন।
বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন একজন।আইইডিসিআর বাংলাদেশে সংক্রমণের যে তথ্য দিচ্ছে, এতে দেখা যাচ্ছে, প্রবাসফেরত বা তাদের সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিরা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু অনেক প্রবাসফেরতকেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা যাচ্ছে না। আশকোনায় হজক্যাম্পে এ নিয়ে হট্টগোলও বেধেছিল।
এই পরিস্থিতিতে সন্দেহভাজনদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার দায়িত্ব দেয়া হয় সেনাবাহিনীকে। বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তৃতির সম্ভাব্যতা এবং প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুইটি কোয়ারেন্টাইনের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। সেগুলো হলো- বিমানবন্দর সংলগ্ন হজক্যাম্প এবং উত্তরার দিয়াবাড়ি সংলগ্ন রাজউক অ্যাপার্টমেন্ট কোয়ারেন্টাইন।এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিং শেষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচিত ব্যক্তিবর্গকে বিমানবন্দরে প্রয়োজনীয় ইমিগ্রেশন শেষে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ইনিউজ ৭১/ জি.হা
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।