সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম ও রাশেদ খান মেননের পর এবার সংসদ অধিবেশনে মিজানুর রহমান আজহারীর কঠোর সমালোচনা করলেন তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর।আজহারী রাসুল সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের অবমাননাকারী মন্তব্য করে তাকে কারাদণ্ড দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।তিনি বলেন, আজ এই সংসদে দাঁড়িয়ে দাবি জানাই, অবিলম্বে রাসুলের অবমানাকারীদের আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদানে আইন প্রণয়ন করা হোক।বৃহস্পতিবার রাতে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ‘মিজানুর রহমান আজহারী রাসুলকে নিয়ে কটাক্ষ করে বলেছেন রাসুল নাকি নিরক্ষর। তিনি পবিত্র মাজার লাথি মেরে ভেঙে ফেলতে বলেছেন। তিনি শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, বিজয় দিবস পালনকে শিরক করা বলে ফতোয়া দিয়েছেন। এমন সব বক্তব্য দিয়ে আজহারী কিভাবে দেশের বাইরে চলে যায়? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে। সেখান বসে আজহারী আবার ইসলাম নিয়ে অপপ্রচারের কাজ শুরু করেছে।’
এরপর তিনি বলেন, ‘দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিধানে ধর্মীয় বিভ্রান্তি নিরসনকল্পে জাতীয় ঈদগাহে প্রধানমন্ত্রীসহ প্রধান বিচারপতির উপস্থিতিতে রাসুলের অবমাননাকারীদের আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদানে আইন প্রণয়ন করার দাবি জানাই।’কেউ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিলে তার ৭ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করার আহ্বান জানান তিনি।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ এনে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত পাঠাতে হবে। তা না হলে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে।জামায়াত-শিবির বসে নেই, গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।’এর আগে মিজানুর রহমান আজাহারী কীভাবে দেশ ছাড়ল তা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলেন ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।গত ১০ ফেব্রুয়ারি সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবে মেনন বলেন, ‘রাষ্ট্র কি অতীতের মতো আবার মৌলবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে? না-হলে আজাহারী দেশ ছেড়ে যেতে পারে না। খতমে নবুয়ত নতুন করে হুঙ্কার ছাড়তে পারে না। হেফাজত সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি দিতে পারে না।’
প্রসঙ্গত, আলোচিত ধর্মীয় বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীর বেশ কিছু ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে আজহারীকে ‘বেন্টলি স্টাইল স্পার’ মডেলের যে গাড়িটি চালাতে দেখা যায় তার আনুমানিক বাজারমূল্য ৫ কোটি টাকা।সোশ্যাল মিডিয়ায় এসব ছবি পোস্ট করে আজহারী মালয়েশিয়ায় বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন বলে মন্তব্য করেন অনেকে। এ নিয়ে আজহারীভক্তদের সঙ্গে তার বিরোধীরা তুমুল বাকবিতণ্ডায় মেতে ওঠেন।পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বিলাসবহুল গাড়ি আজহারীর নয় এবং তিনি মালয়েশিয়ায় গিয়ে এ গাড়ি চালাননি। ছবিগুলোও সম্প্রতি সময়ের তোলা নয়। মূলত এ গাড়িটি আজহারী চালিয়েছেন সিঙ্গাপুরে। আর গাড়ির মালিকের নাম-সাহিদুজ্জামান টরিক। তিনি একজন শিল্পপতি ও বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর চেম্বার্স অব কমার্সের সাবেক সভাপতি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।