যানজটের কারণে ঢাকায় প্রতি বছর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে আনুমানিক ৩-৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা স্থানীয় মুদ্রায় ২৫ হাজার ৪২ হাজার কোটি টাকা। সীমিত সড়ক ও যানবাহনের আধিক্যে মাত্রাতিরিক্ত যানজট বাড়ছে। ফলে চলাচলে গতি হ্রাস পেয়েছে। যা আর্থিক কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঢাকার রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা ১৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকায় গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় ৬ দশমিক ৪ কিলোমিটার। আর হাঁটার গতি হচ্ছে প্রতি ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার। গাড়ির গতি প্রায় হাঁটার গতির সমান। এছাড়া এ শহরে প্রতিদিন ৬ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদন হলেও সংগ্রহ করা হচ্ছে ৪ হাজার টন। এ রকমন নানা কারণে অর্থনীতিতে ঢাকার যে অবদান রাখার কথা তা রাখতে পারছে না। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে যে কোনো উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রাথমিক পরিকল্পনাতেই সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি বলে মনে করে এ উন্নয়ন সহযোগী।
বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংক আয়োজিত ‘মেট্রো ঢাকা ট্রান্সফরমেশন প্লাটফর্ম: ট্রান্সফরমিং মেট্রো ঢাকা ইনটু এ লিভঅ্যাবল প্রসপারুয়াস অ্যান্ড রিজিলিয়েন্ট মেগাসিটি’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বক্তারা বলেন, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে যেতে হলে ঢাকা শহরের পূর্বাংশের দিকে নজর দিতে হবে। এছাড়া ল্যান্ড জোনিং, সিটি গভর্নমেন্ট সিস্টেম চালুসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। সেমিনারে বলা হয়েছে, ঢাকায় প্রতি বছর স্থায়ীভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ৩৫৮ হেক্টর জলাভূমি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ঢাকা বিশ্বের চতুর্থ দূষিত শহর। আরও বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ বাস করে।
মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২০ শতাংশ আসে ঢাকা থেকে। মোট জাতীয় আয়ের ৩৩ শতাংশ আসছে এ শহর থেকে। ৮০ শতাংশ রফতানিমুখী শিল্প রয়েছে ঢাকায়। তাই এ শহর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অর্থনীতিতে ভবিষ্যৎ অবদান নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরের অর্থনৈতিক ঘনত্ব বিশ্বের অনেক শহরের তুলনায় কম। যেমন ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে অর্থনৈতিক ঘনত্ব হচ্ছে সাড়ে ৫ কোটি ডলার।
ব্যাংককে অর্থনৈতিক ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং সিঙ্গাপুরে ২৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ঢাকায় বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ। বলা হয়েছে দেশের দারিদ্র্য নিরসনে দেশের শহরাঞ্চলগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখলেও বর্তমানে শহরে দারিদ্র্য নিরসনের গতি স্থবির। যেটুকু অগ্রগতি হচ্ছে এতে অবদান রাখছে গ্রামগুলো।
অন্যদিকে শহরে তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব বাড়ছে। ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী পুরুষদের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত তরুণদের ২৫ শতাংশ বেকার। আর মাধ্যমিকের পরবর্তী বেকার ২৬ শতাংশ। অন্যদিকে নারীদের মধ্যে মাধ্যমিক ৩৭ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের পরবর্র্তী পর্যায়ে তরুণদের ৪১ শতাংশ বেকার।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।