পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য ৭৮৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ১৩ই ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:২৫ অপরাহ্ন
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য ৭৮৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে

শপথ বাক্য পাঠের মধ্য দিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশ পরিচ্ছন্ন রাখার ‘পরিচ্ছন্নতার যুদ্ধ’ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে এই যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এ সময় পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, মন্ত্রী, মেয়র, চিত্রনায়ক-নায়িকা, বাংলাদেশ স্কাউটস সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে স্কাউট সদস্যদের হাতে এই ‘পরিচ্ছন্নতার যুদ্ধের’ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

এর আগে শুক্রবার ভোর থেকে সংসদ ভবনের এই দক্ষিণ প্লাজা পরিচ্ছন্ন করতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সঙ্গে অংশ নেন চিত্রনায়ক রিয়াজ, স্কাউট সদস্যরা। এরপর সকাল ৯টার দিকে শপথ বাক্য পাঠ করান গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, চিত্র নায়ক রিয়াজ, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও স্কাউট সদস্যরা।

শপথ পাঠে বলা হয়, ‘আমি শপথ করছি যে, যেখানে-সেখানে আর কোনো দিন ময়লা-আবর্জনা ফেলব না। বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে দেশ স্বাধীন করে আমাদের উপহার দিয়েছেন, সেই দেশ পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব আজ থেকে আমি নিলাম। ঘোষণা করলাম, পরিচ্ছন্নতার যুদ্ধ। এবারের অঙ্গীকার, পরিচ্ছন্ন সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকার।’ শপথ বাক্য পাঠের পর স্কাউট সদস্য হারুন বলে, ‘এখানে এসে সুন্দরভাবে পথ চলার দিক-নির্দেশনা পেলাম। সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় খুঁজে পেলাম। আমরা চেষ্টা করবো, আমাদের দায়িত্বগুলো সুন্দরভাবে পালন করার।’

চলতি বছরের ৭ মার্চ ঢাকা উত্তর সিটির নগরপিতা হিসেবে শপথ নেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যখন শপথ নিই, তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তোমার প্রথম কাজ হচ্ছে পরিচ্ছন্নতাকর্মী যারা আছে, তাদের জন্য আবাসনের বন্দোবস্ত করা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মীদের যেন বস্তিতে না থাকতে হয়। তিনি বলেছিলেন, অন্তত তাদের জন্য দুইটা কক্ষ করবা। একটা পড়ার কক্ষ হবে, অন্যটাতে তারা থাকবে। বাথরুম, রান্নাঘর করে দিবা। নিচে স্কুল করে দিবা, যাতে তাদের বাচ্চারা পড়তে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সকলকে জানাতে চাই, মিরপুরে আবাসন প্রকল্প শুরু করেছি। ৭৮৪টি ফ্ল্যাট তৈরি করা হচ্ছে সেখানে। তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মাঝে দেয়া হবে। আপনারা জেনে খুশি হবেন, এ কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করি, ২০২১ সাল নাগাদ ৭৮৪টি পরিবার ওই এলাকাতে চলে যেতে পারবে।‘

বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানো হবে বলেও জানান এই মেয়র। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের উদ্দেশে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটি হচ্ছে আপনাদের জন্য পুরস্কার। আমি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নকর্মীদের বলবো, আপনাদের কাজ কিন্তু আপনাদেরই করতে হবে। যার কাজ তাকেই করতে হবে।’

এই পরিচ্ছন্নতা যুদ্ধের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছেন। আমি যদি একটি যুদ্ধ করতে পারতাম! আমাদের নতুন প্রজন্ম যদি একটি যুদ্ধ করতে পারত! আজ সেই সুযোগ এসেছে। আমাদের পরিচ্ছন্ন সোনার বাংলা গড়ার যে যুদ্ধ, আমরা সবাই মিলে আজকে থেকে সেই যুদ্ধে একসাথে সামিল হব। সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার যে শহরটা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, কারা এর নেপথ্যে আছে? সেই নেপথ্যের কারিগর কারা? নেপথ্যের নায়ক-নায়িকা কারা? তারা সেই আমাদের পরিচ্ছন্নকর্মীরা। মধ্য রাতে তারা মাঠে আসে। ভোর পর্যন্ত কাজ করে তারা নগরীকে বসবাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করেন। আমি তাদের সাধুবাদ জানাই।’ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সবাইকে সাথে নিয়ে আমরা দেশটাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে চাই। যারা এই পরিচ্ছন্নতায় জড়িত, আপনারা সবাই, আমরা একসাথে কাজ করছি। আমরা সকলে মিলে সারাদেশকে পরিচ্ছন্ন করার যুদ্ধে আছি।’

ইনিউজ ৭১/এম.আর