বাবারে নেবুলাইজার দেয়ার পর অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়ে যায়। বাবারে দেখার জন্য লেলীন স্যারের (ডাক্তার) কাছে গিয়ে অনেক আকুতি মিনুতিসহ কয়েক বার তার পা পর্যন্ত ধরেছি। অনেক কান্নাকাটি করেছি। কিন্তু তারপরও তার মন গেলেনি, তিনি বাবারে দেখতেই গেলেন না। উল্টো আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে বলল, এইমাত্র ওষুধ লিখে দিয়েছি, প্রয়োজন হইলে বরিশাল নিয়া যা। এর কিছুক্ষন পরই আমার বাবা মারা যায়। উনি ডাক্তার না, উনি কশাই।
কথা গুলো রবিবার সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদকের সাথে কাদো কন্ঠে বলছিল নিহত সামসুল হক তালুকদারের ছোট ছেলে মিঠু তালুকদার। এসময় মিঠু আরও বলেন, স্যারে (ডাক্তার) যখন আমার মরা বাবারে দেইখা চইলা যায় তখন আমি দৌড়ে তার কাছে গেলে সে আমার হাতে বাবার ভর্তি ফর্ম নিয়া ছিড়া ফালায়। আমার বাবারে লেলিন ডাক্তার মাইরা ফালাইছে।
স্বজনরা জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় নিহত সামসুল হক তালুকদার পায়ে হেটে হাসপাতালের জরুরি ওয়ার্ডে ঢুকেছেন। গ্যাস লাগানোর আগ পর্যন্ত কথা বলছিলেন। পরে তার শরীরে ঘাম দিয়ে অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এসময় ডাক্তার এসে তার প্রেসারটা মাপলে বুজতে পারত আসলে কি হয়েছে। কিন্তু লেলীন ডাক্তার ব্লাড প্রেসার পরিক্ষা না করে ওষুধ লিখে দিয়েছেন। এছাড়া তার কাছে একাধিক বার আকুতি মিনতিসহ কয়েকবার পা ধরলেও তিনি রোগীকে দেখতে আসেননি। এর মধ্যেই মারা যায় সামসুল হক।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চিকিৎসকের অবহেলায় রোগির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। কলাপাড়া ৫০ শয্যা বিশিষ্ট্য হাসপাতালে এ মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল এলাকায় নিহতের স্বজনের ভিড়ে সৃষ্টি হয় হট্রোগোলের। পড়ে গভীর রাতে কলাপাড়া থানা পুলিশের হস্থক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। নিহত সামসুল হক তালুকদারের (৬০) বাড়ি চাকামইয়া ইউনিয়নের আনিপাড়া গ্রামে।
এব্যাপরে ডাক্তার ড. জে এইচ খাঁন লেলীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে ওষুধ লেখার কথা অস্বিকার করেন। পরে তিনি জানান, ভীষন অসুস্থাবস্থায় রোগিকে নিয়ে এলে আমি দেরি না করে গ্যাস দেয়ার জন্য পাঠাই। এরপর নার্সদের কাছে ভর্তিফর্ম জমা দেয়ার আগেই রোগির মৃত্যু হয়। আমি ভর্তিফর্ম ছেড়ার সুজগ পেলাম কোথায়। আমি কোন অবহেলা করিনি।
উপজেলা সাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা চিনময় হাওলদার জানান, ড. লেলীনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা আমরা পাইনি। এছাড়া আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছি সেখানেও কোন ত্রুতি খুজে পাচ্ছিনা।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মনিরুল ইসলাম জানান, রোগী মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে হাসপাতালে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি বিঘ্ন হওয়ার আশংকা দেখা দিলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। নিহতের স্বজনরা ভুল চিকিৎসার কথা বললেও তারা লিখিত কোন অভিযোগ না দেয়ায় আইনগত পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয়নি।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।