চরফ্যাশনে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নবজাতক চুরির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ মামুন হাওলাদার, দৌলতখান প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শনিবার ৩০শে নভেম্বর ২০১৯ ১০:৪২ অপরাহ্ন
চরফ্যাশনে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নবজাতক চুরির অভিযোগ

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় নবজাতক চুরি অভিযোগে দুই চিকিৎসকসহ সেবা ডায়াগনস্টিক মেডিকেল সার্ভিসেস এর সংশ্লিষ্ট ৯ জনকে আসামী করে চরফ্যাশন থানায় এজাহার দাখিল করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে চরফ্যাশন উপজেলার আবু বকরপুর সাকিনের মো. সবুজের স্ত্রী প্রসূতি কুলসুম বেগম বাদি হয়ে এজাহারটি দাখিল করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ২ কর্মচারীকে থানায় নিয়ে গেছেন।

প্রসূতি কুলসুম বেগম অভিযোগ করেন, গত ৭ অক্টোবর চরফ্যাশন সদরের হাসপাতাল রোডে মেঘনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডা. আবদুল্লাহ আল কাফির মাধ্যমে আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন যে, তার গর্ভে দু’টি সন্তান রয়েছে এবং সন্তানরা সুস্থ্য আছে। ওই রিপোর্টে ১৮ নভেম্বরের ১৪দিন আগে বা পরে প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ উল্লেখ করা হয়।

গত ২০ নভেম্বর প্রসব ব্যাথ্যা শুরু হলে তিনি চরফ্যাশন সদরের সেবা ডায়াগনষ্টিক মেডিকেল সার্ভিসের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. নাইমা ইসলাম মীরার শরনাপন্ন হন। ডা. নাইমা ইসলাম মীরা তাকে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার মেডিকেল সার্ভিসেস সেন্টারে ভর্তি এবং সিজারের পরামর্শ দেন।

চিকিৎসকের পরামর্শ ও তত্বাবধানে ২০ নভেম্বর সকাল সারে ১১টায় সেবা ডায়াগনস্টিকে ভর্তি হন এবং দিবাগত রাত ২টায় কুলসুম বেগমকে সিজারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেয়া হয়।

কুলসুম বেগম দাবী করেন, ডা. নাইমা ইসলাম মীরার নেতৃত্বে সিজার করে আসামীরা তার গর্ভে থেকে দু’টি বাচ্চা বের করে আনেন এবং বাচ্চা দু’টির কান্না তিনি স্পষ্ট শুনতে পান। এসময় আসামীরা একে অপরের সাথে বলাবলি করে বাচ্চা দু’টির মধ্যে একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে। সিজারের সময় রোগীর স্বজনদের ওটি রুমের সামনে থাকতে না দিয়ে দ্বিতীয় তলার ৪নং কক্ষে থাকতে বাধ্য করা হয়।

সিজার শেষে প্রসূতিকে ওটি থেকে তার নামে বরাদ্দকৃত দ্বিতীয় তলার ৪নং কক্ষে নেয়া হলে স্বজনরা প্রসূতিকে একটি মেয়ে সন্তান তুলে দেয়। অপর সন্তান কোথায় জানতে চাইলে স্বজনরা একটি সন্তানই তাদের বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানায়।

পূর্বের রিপোর্ট অনুযায়ী তার গর্ভে দু’টি সন্তান ছিল এবং অপর সন্তান কোথায় এমন প্রশ্ন তোলায় সেবা ডায়াগনস্টিক মেডিকেল সার্ভিসের চিকিৎসক ও স্টাফরা তার সাথে খারাপ আচরণ করেন। ঘটনার সময় তার স্বামী সবুজ ঢাকায় ছিলেন। স্বামী ঢাকা থেকে এসে অপরাপর চিকিৎসকদের সাথে পূর্বেকার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে সেবা ডায়াগনস্টিকমেডিকেল সার্ভিসের কর্তৃপক্ষের শরনাপন্ন হলে তার সাথেও অশোভন আচরণ করা হয়। ফলে শনিবার প্রসূতি বাদি হয়ে চিকিৎসকসহ ৯জনকে আসামী করে চরফ্যাশন থানায় এজাহার দাখিল করেন।

এজাহারে উল্লেখিত আসামীরা হচ্ছেন, গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. নাইমা ইসলাম মীরা, সেবা ডায়াগনস্টিক মেডিকেল সার্ভিসের মালিক মো. শাহজাহান,এ্যানেস্থেসিয়া ডা. নাহিদ, ওটি ইনচার্জ মো. রবিন, ম্যানেজার মো. মঞ্জু, নার্স সেলিনা বেগম, আয়া ফাহিমা বেগম, স্টাফ নাহার বেগম, পিয়ন মোশারফ। অভিযোগ প্রসঙ্গে ডা. নাইমা ইসলাম মীরা বলেছেন, রিপোর্টে দু’টি কিন্ত গর্ভে একটি সন্তানই ছিল। প্রসূতির মা ও ভাইকে ওটিতে নিয়ে একটি সন্তান দেখিয়ে নিশ্চিত করে গর্ভ থেকে সন্তান তোলা হয়েছে। চরফ্যাশন থানার ওসি তদন্ত কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস জানান, বাদির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আসামীদের থানায় ডাকা হয়েছে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব