প্রশাসনের দুর্নীতি বন্ধে আসতে পারে নতুন নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ২১শে অক্টোবর ২০১৯ ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন
প্রশাসনের দুর্নীতি বন্ধে আসতে পারে নতুন নির্দেশনা

প্রশাসনের শীর্ষপদে পরিবর্তন আসছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বিশ্বব্যাংকের সদর দফতরে ‘বিকল্প নির্বাহী পরিচালক’ হিসেবে আগামী মাসে যোগ দিতে যাচ্ছেন। তার স্থলাভিষিক্ত হবেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এছাড়া ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিব অবসরে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে পারেন। এসব পদে আবার নতুন মুখও দেখা যেতে পারে। এমন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের (সচিব) সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

সভায় ক্যাসিনোসহ চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযান, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূল এবং উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সভায় আলোচনা হতে পারে। পাশাপাশি প্রশাসনের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে নতুন নির্দেশনাও দেয়া হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।

সূত্র জানায়, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সচিব সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। সভায় সহকর্মীদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নিতে পারেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। এতে নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামকে আনুষ্ঠানিক পরিচয় করিয়ে দেয়া হতে পারে। সভায় বালিশকাণ্ডসহ মন্ত্রণালয়গুলোর কেনাকাটার বিষয়ে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এছাড়া কাজের বাস্তবায়ন চিত্র এবং বিরাজমান সমস্যাগুলো সচিবরা তুলে ধরবেন। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনের বিষয়েও সচিব সভায় বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে এক সিনিয়র সচিব বলেন, প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এ সভায় প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ, সরকারের মেগা প্রকল্প ও ই-নথি ব্যবহারসহ সরকারি সেবা কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। এ ছাড়া যেসব উন্নয়ন কাজ এখনও শেষ হয়নি সেসব কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন, সরকারি চাকরির শূন্য পদ পূরণ ও নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে নির্দেশনা দেবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সব সমস্যার কথা সচিবরা বলতে পারেন না। আবার এমন কিছু সমস্যা থাকে যেগুলো না বললেও হয় না। এ সভা তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসার পূর্বপ্রস্তুতি। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার কর্মসূচিগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

নাম প্রকাশ না করে অপর এক সচিব জানান, সভায় চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা আসতে পারে। বিশেষ করে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কেনাকাটা নিয়ে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কৈফিয়ত চাইতে পারেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়া হবে। এছাড়া কিভাবে প্রশাসনের অনিয়ম-দুর্নীতি কমানো যায় সে বিষয়ে সচিবদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হতে পারে। সর্বোপরি প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধে নতুন কোনো নির্দেশনাও আসতে পারে।

জানা গেছে, সাধারণত প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত না থাকলে সচিব সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব সভাপতিত্ব করেন। এবার সচিব সভায় থাকছেন না প্রধানমন্ত্রী। ২০১৭ সালের ২ জুলাই সচিবদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ সভা করেন। অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধসহ সচিবদের ২৬ দফা নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সভায় ৭১ জন সচিব অংশ নেন। ১৬ জন সচিব বক্তব্য দেন। নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সচিব সভার আয়োজন করা হবে বলে জানা গেছে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর