উখিয়ার বাজারে কাঁচা মরিচ-পিয়াঁজ ডিমে আগুন!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ২২শে জুলাই ২০১৯ ০১:২৮ অপরাহ্ন
উখিয়ার বাজারে কাঁচা মরিচ-পিয়াঁজ ডিমে আগুন!

কক্সবাজারের উখিয়ার বাজারে গত মাসে কাঁচা মরিচের দাম ছিল ৪০ টাকা। আর গতকাল কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়।পিঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ১৮-২০ টাকায় এখন ৩৮ টাকায়। আর এক ডজন ডিম বিক্রি হয়েছিল ৯৬ টাকায় গতকাল বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়। এক মাসের ব্যবধানে প্রতিকেজি মরিচের দাম বেড়েছে ১৬০ টাকা। পিঁয়াজ ১৮ টাকা, আর ডিম ২৪ টাকা। এই তিনটি পণ্য বেশির ভাগ গরিব খেটে খাওয়া ও ব্যাচলর মানুষেরাই কিনে থাকেন। মাছ-মাংস থেকে শুরু করে বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম উর্ধ্বগতি। তাই বিপাকে পড়েন দিন আনা, দিন খাওয়া মানুষরা। এদিকে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভারতে সামান্য মূল্য বৃদ্ধি ও বৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে প্রতি দিন লুফে নিচ্ছে অতিরিক্ত মুনাফা।মুনাফা লোভীদের কারণে ভারতে পিঁয়াজের দাম কমলেও দেশের বাজারে তার কোনো প্রভাব নেই।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পিঁয়াজ ব্যবসায়ী বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গত শনিবার থেকে ১৮ টাকা কেজি দরে ভারত থেকে পিঁয়াজ এসেছে দেশে।

এসব পিঁয়াজ ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে গেছে। কিন্তু দাম এখনও কমাননি পাইকারি কিংবা খুচরা ব্যবসায়ীরা। পিঁয়াজ ব্যবসায়ী আলম বলেন, পরিবহন খরচ ও অতি বৃষ্টির কারণে পিঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে।উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এক এনজিও কর্মী শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি ব্যাচলর মানুষ ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের জন্য খুবই অসুবিধা হচ্ছে। রিক্সা চালক মোজাহের বলেন, মরিচসহ নিত্যপণ্য সামগ্রীর যে দাম তাতে আমাদের মতো গরিবের জীবন দুর্বীষহ হয়ে উঠেছে।সামনে কোরবান দাম বাড়ছে সব ধরনের পণ্যের। স্কুল শিক্ষক ফরিদুল আলম বলেন, ব্যবসায়ীরা যে কোনো পণ্যের দাম বাড়ানোর অজুহাত খোঁজে। পরিবহন খরচ ও বন্যাকে এবার তারা অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে। বাজারে নিত্যপণ্য সরবরাহে কোনো কমতি নেই। তারপরও দাম বাড়ানো সম্পূর্ণ অনৈতিক। আসলে ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছেমতো বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। আর এটা তারা করতে পারে সরকারের জোরদার মনিটরিং না থাকায়।

অন্যদিকে উখিয়া দারোগা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, নিত্যপণ্যের বাজারে বেশ গুমোট ভাব বিরাজ করছে। ক্রেতারা যেমন চড়া দামের কারণে নাকাল, তেমনি বিক্রেতারাও আছেন অস্বস্থিতে। দারোগা বাজারের মুদির দোকানদার খোরশেদ আলম বলেন, ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের ঝামেলা হচ্ছে। ক্রেতারা রীতিমতো ঝগড়া করছেন আমাদের সঙ্গে। কেন এত দাম বেশি তারা জানতে চাচ্ছে। কিন্তু আমাদের তো কিছু করার নেই। পাইকারি বাজারে বেশি দাম রাখা হচ্ছে তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি। বাড়ি বাড়ি কাজ করে খেটে খাওয়া আয়েশা বেগম বলেন, আমরা তো গরিব মানুষ। চাল, তেল, মরিচ, পিঁয়াজ, ডিম, ডাল, মাছসহ প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম আমাদের নাগালের বাইরে। দিন দিন বাড়ছে পণ্যের দাম। কেন আমাদের মতো গরিবদের পেটে লাথি মারা হচ্ছে। স্বামী মারা যাওয়ায় পর ছয় সন্তান ছেলে-মেয়ে নিয়ে পরের বাড়িতে কাজ করে খাই। আমাদের মতো গরিবের খবর কেউ রাখে না।

ইনিউজ ৭১/এম.আর