পাকা সড়ক কাচা হয়ে খানা-খন্দকে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ১২ই জুলাই ২০১৯ ০৬:২০ অপরাহ্ন
পাকা সড়ক কাচা হয়ে খানা-খন্দকে ভোগান্তি

ভোলার বোরহানউদ্দিনে উপজেলার বাংলাবাজার-নতুনবাজার(কেরামতগঞ্জ) সড়কটি প্রায় ১৫ বছর কোন প্রকার সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে কাচা না পাকা সড়ক তা বোঝা যাচ্ছেনা। ওই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত থাকায় কোন যানবাহন চলালাচল করতে পারছেনা। বর্ষা মৌসুমে বড় গর্তের ভিতর পানি জমে থাকায় একটি প্রাইমারী ও একটি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর উপস্থিতি অর্ধেকে নেমে আসে। এছাড়া চরম ভোগান্তিতে চলাফেরা করছে এলাকাবাসী। কিছু পরিবার সন্তানের লেখাপড়ার ব্যাঘাতের কারণে উপজেলা সদরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। 

এলাকাবাসী জানান, ২০০৪-২০০৫ সালের দিকে এ সড়কটি পাকাকরণের কাজ শুরু হয়। সড়কটি বড়মানিকা ইউনিয়নের আট নাম্বার ওয়ার্ডের আলিমুদ্দিন বাজারের পশ্চিম প্রান্ত থেকে পক্ষিয়া ইউনিয়নের সাত নাম্বার ওয়ার্ডের কেরামতগঞ্জ বাজার পর্যন্ত মিশে দুই ইউনিয়নকে সংযুক্ত করেছে। সড়ক উন্নয়নের সময় মেকাডামের (কাপেটিংয়ের আগে) কাজ হলেও কার্পেটিংয়ের কাজ হয়নি। সরেজমিনে দেখা যায় ওই দুই-আড়াই কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশ স্থান থেকে ইট-খোয়ার অস্থিত্ব নেই। এতে বোঝার উপায় নেই সড়কটি এক সময় পাকা ছিল। বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্ত। গর্তগুলো পানিতে ভরে আছে। স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পড়নের কাপড় ভিজিয়ে রাস্তা পাড় হচ্ছে। ওই সড়কের পাশের উত্তর-পূর্ব পক্ষিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতার হোসেন জানান, তার স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সোয়া দুই শত। বর্ষার সময় স্কুলে উপস্থিতি অধের্কেরও কম হয়। এছাড়া শিক্ষকদেরও প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে আসতে হয়। একই পরিস্থিতির কথা জানালেন উত্তর পক্ষিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আ.জ.ম গিয়াসউদ্দিন। তিনি জানান, মাদ্রাসার পৌনে চারশত শিক্ষার্থী। শুধু সড়কের কারণে বর্ষার সময় মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর উপস্থিতি মারাক্তকভাবে হ্রাস পায়। 

কেরামতগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম,মাহমুদুল্লাহ,গিয়াসউদ্দিন পাটোয়ারী জানান, কোন পরিবহন না চলাচল না করায় তারা ঠেলা গাড়িতে করে মালামাল আনেন। এতে ১ শত টাকার মাল ১ শত ৪০ টাকায় বিক্রি করতে হয়। কাপড়ের ব্যবসায়ী মো. রাসেল জানান, কাপড় আনার মত কোন পরিবহন না চলায় তার দোকান বন্ধের পথে। সড়কের পাশের বাসিন্দা বোরহানউদ্দিন আলিয়া মাদ্রসার প্রভাষক হাবিবুর রহমান জাযিরি জানান, এ এলাকায় সম্মুখযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী আবুল কাশেম সহ অনেক সভ্রান্ত পরিবারের বসবাস। এছাড়া আধা কিলোমিটার দূরবর্তী মেঘনায় ব্লক বেড়ীবাঁধ হওয়ায় জনবসতী ক্রমেই বাড়ছে। এই দুই কিলোমিটার সড়কের জন্য তাকেও প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিয়ে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে।  এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার গাইন জানান, ওই সড়কটি এখন আর মেরামতের পর্যায়ে নেই। নতুন করে সড়ক নির্মানের জন্য একটি প্রকল্পের আওতায় উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের দপ্তরে প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব