থানায় ধর্ষিত শিশুকে ১২ ঘণ্টা বসিয়ে রাখল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ১২ই জুলাই ২০১৯ ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন
থানায় ধর্ষিত শিশুকে ১২ ঘণ্টা বসিয়ে রাখল পুলিশ

মামলা না নিয়ে ধর্ষণের শিকার এক স্কুলছাত্রীকে ১২ ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা রেলওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়েছে।এদিকে, আদালতে অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানা গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় কমলাপুরে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনে ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়।তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বিমানবন্দর থানা এবং রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা রেলওয়ে পুলিশের কাছে নেয়া হয়। কিন্তু সেখানে ১২ ঘণ্টা পরও পুলিশ মামলা নেয়নি। এ সময় শিশুটি পেটে ব্যথা করছে জানিয়ে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তবে পুলিশ বলছে, শিশুটি ঘটনার বর্ণনা না দেয়ায় এবং স্বজনদের না পাওয়ায় মামলা রের্কড করতে দেরি হয়েছে।রেলওয়ে থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর রুশো বণিক বলেন, থানায় আসার পর শিশুটি কিছু বলতে রাজি হয়নি। কিছু জানতে চাওয়া মাত্র সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

তিনি বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে শিশুটি তার পরিবারের পরিচয় জানায়। এরপর থানায় তার মাকে এনে মামলা করার জন্য বলা হয়। প্রথমে মা মামলা করতে রাজি হননি। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি ধর্ষণ মামলা করেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে থানায় অবস্থানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাতুল শিকদার জানান, পুলিশের ঢিলেমির কারণে অসুস্থ শিশুটিকে থানায় বসে থাকতে হয়েছে।পুলিশ চাইলে রাতেই শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে পারত। কিন্তু দুপুর পার হলেও তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়নি।পুলিশ শুধু বলছে, তারা এজাহার লিখছে। রাতুল আরও জানান, শিশুকে ট্রেন থেকে উদ্ধার করেন যাত্রীরা। এ ঘটনায় সম্রাট নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে।

ট্রেনের এক যাত্রী জানান, শিশুটির নানি মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বুধবার বিকালে শিশুটি হাসপাতালের নিচে নামলে সেখান থেকে ভুল বুঝিয়ে সম্রাট তাকে রিকশায় করে কমলাপুর নিয়ে যায়।এরপর ফাঁকা ট্রেনের মধ্যে ভয় দেখিয়ে সে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। এরপর মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। ট্রেন ছাড়ার পর শিশুটির চলাফেরা অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় তার সঙ্গে কেউ আছে কিনা যাত্রীরা জিজ্ঞেস করেন। তখন সে যুবক সম্রাটের নাম বলে।শিশুটি অসুস্থবোধ করায় এবং যুবকের পরিচয় নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় যাত্রীরা তাকে আটকে রাখেন। এরপর বিমানবন্দর স্টেশনে ট্রেন থামলে শিশুটিকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়।

সেখানে ধর্ষণের শিকার কারও চিকিৎসা করা হয় না বলে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এরপর শিশুকে রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে নেয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে মানিকনগর থেকে শিশুটির মাকে থানায় আনা হয়।শিশুটির মা জানান, ‘বুধবার বিকালে ওকে হাসপাতালে রেখে আসি। পরে শুনি তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। রাত দেড়টার দিকে পুলিশ এসে ঘটনা জানায়।’রেলওয়ে পুলিশ ঢাকা জোনের এএসপি ওমর ফারুক বলেন, মামলার কাজ শেষ হয়েছে। শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় ধর্ষণ ও অপহরণ আইনে মামলা হয়েছে। আদালতে অভিযুক্ত সম্রাট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।