ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে নড়িয়ায় চার যুবক নিখোঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৪ই মে ২০১৯ ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে নড়িয়ায় চার যুবক নিখোঁজ

লিবিয়া থেকে ইউরোপের ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবে নিখোঁজদের মধ্যে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চার যুবক রয়েছে বলে দাবি পরিবারের। তাদের কোন সন্ধান না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। নিখোঁজদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এছাড়াও ওই নৌকায় থাকা একই ইউনিয়নের আরও দুই যুবক তিউনিশিয়ার একটি আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন বলেও স্বজনরা জানিয়েছেন। নিখোঁজ ওই চার যুবক হলেন শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের পাটদল গ্রামের মৃত হাসেম মোল্যার ছেলে সুমন মোল্যা (২৪), দক্ষিণ চাকধ গ্রামের গৌতম দাসের ছেলে উত্তম দাস (২৩), হারুন হাওলাদারের ছেলে জুম্মান হাওলাদার (১৯) ও চাকধ গ্রামের মোর্শেদ আলী মৃধার ছেলে পারভেজ মৃধা (২২)।

একই নৌকায় থাকা দক্ষিণ চাকধ গ্রামের আলাউদ্দিন মকদমের ছেলে শিশির মকদম (২২) ও শিশিরের মামা নলতা গ্রামের মিন্টু মিয়া (৩০) তিউনিসিয়ার একটি আশ্রয় কেন্দ্রে আছেন। ওই যুবকরা একই সাথে গতবছর রমজান মাসে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়া যায়।নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তিউনিসিয়ার উপকূলের কাছে ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীবাহী একটি নৌকা ডুবে যায়। ওই নৌকায় শরীয়তপুরের বেশ কয়েকজন যুবক ছিল বলে তিউনিশিয়ার আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা শিশির মকদম তার স্বজনদের জানিয়েছে। এ খবর জানার পর ইতালি যাওয়ার জন্য লিবিয়ায় থেকে ইতালী যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে নড়িয়ার নিখোঁজ ৪ যুবকের বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

উত্তম দাসের মা কবিতা রাণী দাস বলেন, আমার ছেলে আমাদের সকল বাঁধা বিপত্তির পরেও ইতালি যাওয়ার জন্য গত রমজান মাসে লিবিয়া যায়। সেখানে এক বছর থাকার পর দালালের মাধ্যমে লিবিয়া থেকে গত বৃহস্পতিবার নৌকাযোগে ইতালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। ভুমধ্যসাগরে নৌকা ডুবির খবর টেলিভিশনে দেখে আমরাও খোজখবর নেয়ার চেষ্টা করলেও কোন খবর পাইনি। গতকাল রাতে শিশির মকদমের আত্বীয়ের মাধ্যমে জানতে পারি যে আমার ছেলে সহ শরীয়তপুরের আরও কয়েকজন একই নৌকায় ছিল। আমার ছেলে উত্তম সহ আমাদের এলাকার আরও তিন জনের কোন খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।

আমাদের সন্তানরা বেচে থাকলে তাদেরকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে। আর যদি মরে গিয়ে থাকে তাহলে তাদের লাশ আমরা দ্রুত ফেরৎ চাই। এছাড়াও নিখোঁজ থাকা অন্যান্য যুবকদের পরিবারের স্বজনরা একই দাবি জানিয়েছেন। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কজী আবু তাহের বলেন, ভুমধ্যসাগরে নৌকা ডুবির ঘটনায় শরীয়তপুরের কেউ নিখোঁজ হয়েছেন এ রকম কোন তথ্য আমরা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাইনি। তবে নিখোঁজের বিষয়ে জানতে পারলে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর