পানি কোনটা খাব, সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার: ওয়াসার এমডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৩শে এপ্রিল ২০১৯ ০৮:১১ অপরাহ্ন
পানি কোনটা খাব, সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার: ওয়াসার এমডি

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেছেন, আমি তো খাব আমার পানি। আমি কোনটা খাব, না-খাব; সেটা তো আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। পানি ‘শতভাগ বিশুদ্ধ’ বলে দাবি করলেও সেই পানি দিয়ে অন্যের বানানো শরবত খেতে আপত্তি আছে বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার একটি গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, আমি তো কারো পানিতেই... কারোই তো খাব না। আমি তো খাব আমার পানি। আমি কোনটা খাব, না-খাব; সেটা তো আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।

এদিন দুপুরের দিকে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানকে প্রশ্ন করা হয়- ওয়াসার পানি যেহেতু সুপেয়, মিজানুরের বানানো ওই শরবত তিনি খাবেন কি না? জবাবে তাকসিম এ খান বলেন, অন্য কারো হাতে বানানো শরবত তিনি খাবেন না। মিজানুরের নিয়ে আসা শরবত খাওয়ারও কোনো প্রশ্ন আসে না। তিনি বলেন, তাদের পানিতে যদি ময়লার অভিযোগ থাকে, তাহলে তারা পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে পারে। মিজানুর শরবত দিয়ে ওয়াসা ভবনের সিঁড়িতে বসে আছেন। এখন সেখানে যাবেন কি না জানতে চাইলে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, যাব তো বটেই। আমার তো ৪টার সময় মিটিং আছে একটা।

‘ঢাকা ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়’- ২০ এপ্রিল সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের এমন বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান পুরান ঢাকার জুরাইনবাসী। ঢাকার জুরাইনবাসীর পক্ষে নেতৃত্ব দেন ওই এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান। তিনি স্ত্রী শামিম হাশেম খুকি, তাদের শিশুকন্যা এবং পরিবারের বন্ধু মতিউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টায় কারওয়ান বাজারে অবস্থিত ওয়াসা ভবনের সামনে অবস্থান নেন। ওয়াসার ‘শতভাগ বিশুদ্ধ’ পানির শরবত বানিয়ে এমডিকে খাওয়ানোর কর্মসূচি পালন করেন তারা।

জুরাইনবাসীর ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচি ঘিরে ওয়াসা ভবনের সামনে লোকজনের জটলা তৈরি হয়। জুরাইনবাসীর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন পথচারীরাও। এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেয়া মিজানুর রহমান তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে জগ বের করে জুরাইন এলাকার পানি বের করে গ্লাসে ঢালেন। এই পানি দিয়ে শরবত বানিয়েছেন তিনি। এটি ওয়াসার এমডিকে খাওয়াতে চান তিনি। মিজানুরের ওয়াসা ভবনে আসার পরিকল্পনার খবর আগের দিনই গণমাধ্যমে প্রচার হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার তারা যখন কারওয়ান বাজারে এলেন, সাংবাদিকদের পাশাপাশি পুলিশও সেখানে উপস্থিত। শুধু নেই ওয়াসার এমডি।

উপস্থিত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা মিজানুর ও তার সঙ্গীদের ওয়াসা ভবনে ঢুকতে বাধা দিয়ে জানালেন, এমডি সাহেব অফিসে নেই, তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশের ওই বক্তব্য শুনে মিজানুর তার সঙ্গীদের নিয়ে ওয়াসা ভবনের সিঁড়িতে বসে পড়েন। তাদের সামনেই রাখা ছিল কাচের জগে ওয়াসার কলের পানি, লেবু আর চিনি। শরবত নিয়ে ওয়াসার এমডির অপেক্ষায় থাকা মিজানুর সাংবাদিকদের বলেন, জুরাইন এলাকায় ওয়াসার পাইপ ৪০ বছর আগের। এই পানি আমরা খাই না। খাওয়ার উপযোগী না। বাধ্য ও নিরুপায় হয়ে অন্য কাজে ব্যবহার করি।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব