৭ জন নিহতের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বরিশাল ট্রাফিক বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
এম. কে. রানা - বার্তা প্রধান ইনিউজ৭১
প্রকাশিত: বুধবার ২৭শে মার্চ ২০১৯ ০৭:৪৫ অপরাহ্ন
৭ জন নিহতের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বরিশাল ট্রাফিক বিভাগ

বরিশালের গড়িয়ারপাড়ে বাস-মাহিন্দ্রার মুখোমুখী সংঘর্ষে বিএম কলেজ ছাত্রীসহ ৭ জন নিহতের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বরিশাল ট্রাফিক বিভাগ। আজ বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে শহীদ আব্দুর রহমান সেতুর (দপদপিয়া সেতু) টোল ঘরের সামনে বিভিন্ন পরিবহনের উপর অভিযান চালায় বিএমপি ট্রাফিক বিভাগ। এ সময় বাসসহ বিভিন্ন পরিবহনের ফিটনেস, রুপ পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, অতিরিক্ত যাত্রী এবং গাড়ির ছাদে যাত্রী বহন করার দায়ে বরিশাল-পটুয়াখালী রুটের ৩টি বাস ও ১টি এ্যাম্বুলেন্স আটক করা হয় এবং বিভিন্ন পরিবহনে ৬৩টি মামলা দায়ের করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিসি (ট্রাফিক) খায়রুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার এসি-১ (ট্রাফিক) মোঃ মাসুদ রানা, এসি-২ ফায়জুর রহমান, টিআই-১ শামসুল আলম, টিআই বিদ্যুৎ চন্দ্র দে, টিআই শাহআলম, টিআই মোঃ রহিম, সার্জেন্ট কামরুল ইসলাম, সার্জেন্ট মাহাবুব, সার্জেন্ট তারেক ও সার্জেন্ট ইমরান।

গত ২৩ মার্চ বিএম কলেজ শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। একই সাথে বাস শ্রমিকরা তাদের চালককে আটকের প্রতিবাদে বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন। সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহসহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা। মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবীগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে ছাত্ররা অবরোধ তুলে নেন।

দাবীগুলো হলো কলেজ ছাত্রী শীলাসহ বাকি নিহতদের পরিবারকে পর্যাপ্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়া, মহাসড়কে থ্রী-হুইলার চলাচল বন্ধ করা, সুমনসহ বাকী আহতদের চিকিৎসার সু-ব্যবস্থা করা, ঘাতক বাস চালকের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা, সড়ক ও নৌ পথে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের হাফ-ভাড়া নিশ্চিত করা, সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসমূহে ফুটওভার ব্রীজ স্থান ও এর নামকরণ নিহত শিলাসহ অন্যান্যদের নামে করা, ফিটনেস বিহীন গাড়ী ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, চুক্তিভিত্তিক ও সময়ভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ করা, পরিবহন মালিক শ্রমিকদের সিন্ডিকেট বন্ধ করা, সড়ক-মহাসড়ক সংলগ্ন স্কুল কলেজের সামনে স্পিড-ব্রেকার নির্মাণ ও জেব্রা ক্রসিং এর ব্যবস্থা করা, ট্রাফিক আইন আরো জোরদার ও নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা এবং সড়ক মহাসড়কে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা ও তা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা। 

এরই ধারাবাহিকতায় কলেজ শিক্ষার্থীদের ১৩টি দাবী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২৫ মার্চ সোমবার  বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ যৌথ মতবিনিময় সভা করেছেন। যেখানে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, ছাত্র-ছাত্রী, প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, বাস-মাহিন্দ্রা মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় মেয়র শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ দাবী মেনে নেয়ার ঘোষণা দেন এবং সকলকে গঠনমূলক দিকনির্দেশনা দেন। আজ বুধবার বাস, মিনিবাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিক-আপ, মাহিন্দ্রা ও মটর সাইকেলের ফিটনেস, রুপ পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ইন্সুরেন্সসহ দরকারী কাগজপত্র চেক করেন ট্রাফিক বিভাগ। এ সময় ফিটনেস ও রুটপারমিটের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বরিশাল-পটুয়াখালী রুটের ৩টি বাস ও একটি এ্যাম্বুলেন্স আটক করা হয়। এছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা, হেলমেটর ব্যবহার না করা ও ইন্সুরেন্স না থাকায় বিভিন্ন পরিবহনসহ মোট ৬৩টি মামলা দায়ের করা হয়। সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মাসুদ রানা বলেন, এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবৈধ যে কোন পরিবহনই এ অভিযানের আওতায় থাকবে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব