বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটাকে ‘মিরাকল’ (অলৌকিক ঘটনা) বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে একটি গবেষণা গ্রন্থে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) তত্ত্বাবধানে তিন বছর ধরে গবেষণার পর প্রকাশিত ‘ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ মিরাকল অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’ শিরোনামের বইটিতে বাংলাদেশের উন্নয়নকে এই আখ্যা দেয়া হয়। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে (বিআইডিএস) বইটির মোড়ক উম্মোচন করা হয়। ‘এম্পেরিকাল স্টাডিজ অন রিস্ক অ্যান্ড প্রোভার্টি ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে তিন বছরের একটি গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। তারই সার অংশ তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। বইটির গবেষণায় যুক্ত ছিলেন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের মহাপরিচালক ও প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. ইয়াসুয়ুকি সাওয়াডা এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো ড. মিনহাজ মাহমুদ।
বইয়ের বিষয়ে বর্ণনা দিয়ে ইয়াসুয়ুকি সাওয়াডা বলেন, ‘আমরা বইটিতে বলার চেষ্টা করেছি, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নে মিরাকল ঘটেছে। কারণ বিভিন্ন রকম প্রতিকূল পরিবেশ, দুর্বল সুশাসন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, বৈষম্য, দ্রুত নগরায়ণের ঝুঁকি এবং তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি সত্ত্বেও বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেছে। আমরা গবেষণা করে বইটিতে দেখিয়েছি, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কোন কোন বিষয়গুলো ভূমিকা রেখেছে।’ লেখক মিনহাজ মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে কী ঘটেছে, আমরা সেটা এ বইয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’ তবে, বইটিতে যে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, তার সঙ্গে বাস্তবতার ফাঁরাক রয়েছে বলে মনে করেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. বিনায়ক সেন। তার মতে, দেশে এখনও অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্জন প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি। বাংলাদেশের এখন এই বিষয়গুলোকে একটু ভিন্নভাবে দেখা প্রয়োজন। কারণ বাংলাদেশের মতো অর্থনৈতিক অবস্থায় এক সময় চীন ও ভিয়েতনামও ছিল। তারা এখন বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। ভিয়েতনাম ও চীনের এগিয়ে যাওয়ার সেই দিকগুলো বাংলাদেশের দেখা প্রয়োজন।’
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘২০ বছর আগে দেশের উন্নয়ন এভাবে করা যাবে, সেটাই অনেকে বিশ্বাস করতো না। কিন্তু আমরা সেটা করে দেখাতে পেরেছি। এটা সত্যিই অলৌকিক। এটা সম্ভব হয়েছে সরকারের ধারাবাহিকতা ও সঠিক নেতৃত্বের কারণে। সুশাসন নিয়ে সবাই কথা বলে আমি মনে করি দারিদ্র্য বিমোচন সামাজিক সুরক্ষা ও মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ করতে পারলে সুশাসন এমনিতেই চলে আসবে।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. কে এ এস মুর্শিদ।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।