প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:২০
কর ফাঁকি রোধ ও রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া সহজ করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্টে সার্বক্ষণিক প্রবেশাধিকার চেয়েছে। এনবিআর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আবেদন করেছে, যাতে হিসাবধারীর ব্যালেন্সসহ তিন ধরনের তথ্য সরাসরি জানার সুযোগ পায়। তবে ব্যাংকাররা সতর্ক করে বলছেন, এতে গ্রাহকের গোপনীয় তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
ব্যাংকার্স বহিঃসাক্ষ্য আইন অনুসারে কোনো ব্যাংক গ্রাহকের তথ্য প্রকাশ করতে পারে না। তবে শর্তসাপেক্ষে আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমসের অনুমোদিত ব্যক্তি বা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার তত্ত্বাবধানে তথ্য জানা সম্ভব। বর্তমানে এনবিআর বা অন্য কোনো সংস্থার সরাসরি আমানতকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রবেশাধিকার নেই। কোনো তথ্যের প্রয়োজন হলে ব্যাংক কেবল বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পেলে তা সরবরাহ করে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, অনলাইন রিটার্নের সঙ্গে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স, সুদের আয় এবং উৎসে কর্তন করা করের রিয়েল-টাইম তথ্য জানার সুযোগ চায় এনবিআর। তিনি বলেন, এ পদক্ষেপ কর ফাঁকি রোধ, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া সহজ করতে সহায়ক হবে। তবে গ্রাহকের তথ্য সুরক্ষার প্রশ্ন এ অবস্থায় উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকি জানান, আইন অনুযায়ী গ্রাহকের স্বার্থ বিবেচনা করে এই বিষয়ে ব্যাংক, এনবিআর ও সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যে বলা হয়েছে, দেশে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টিআইএনধারীর মধ্যে প্রায় ৪৫ লাখ করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছেন। এই তথ্য অনুযায়ী, করদাতাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং কর সংক্রান্ত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরাসরি ব্যাংক তথ্য পাওয়ার ব্যবস্থা কার্যকর হলেও এতে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার ঝুঁকি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে রিয়েল-টাইম তথ্য সংগ্রহে নিয়মিত নজরদারি ও প্রটোকল প্রয়োজন।
এনবিআর এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সমন্বয়ে এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে কর ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন কর প্রক্রিয়াকে সহজতর করবে।