প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৩৩
দুদিনের সরকারি সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। শনিবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। প্রায় ১৩ বছর পর কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফর কূটনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিনের শীতল সম্পর্ক কাটিয়ে উঠতে এবং রাজনৈতিক যোগাযোগ নতুন করে সক্রিয় করতেই এ সফর। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালোচ ঢাকা সফর করেছিলেন, যা এই সফরের প্রস্তুতিমূলক উদ্যোগ হিসেবে দেখা হয়।
ইসহাক দারের সফর মূলত দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা খোঁজা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানোর উদ্দেশ্যে। সফরের অংশ হিসেবে রোববার তিনি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে একান্ত বৈঠক ও প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন।
বৈঠক শেষে ব্যবসা, বিনিয়োগ, সংযুক্তি, জনগণের চলাচল সহজীকরণ এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ বিভিন্ন বিষয়ে পাঁচ থেকে ছয়টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, এই বৈঠক দুই দেশের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
রোববার বিকালে ইসহাক দার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়াও তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
তার এই সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কারণ ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের পর পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় এবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠককে কেন্দ্র করে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আশা করছে উভয় দেশ।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীতের অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধান করতে পারলেই সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। উভয় পক্ষ পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া ও অভিন্ন স্বার্থে কাজ করতে আগ্রহী বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
২০১২ সালে সর্বশেষ পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার ঢাকা সফর করেছিলেন। এরপর এতদিনে এই উচ্চপর্যায়ের সফর হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।