প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:২৭
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক হালাল পণ্যের বাজারে অংশগ্রহণ বাড়াতে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চেয়েছে দেশটি। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং দ্রুত কাজ এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।
বৈঠকে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের হালাল বিষয়ক সমন্বয়কারী দাতিন পদুকা হাজাহ হাকিমাহ বিনতি মোহাম্মদ ইউসুফ নেতৃত্ব দেন। এছাড়াও ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মহাপরিচালক সিরাজুদ্দিন বিন সুহাইমি এবং হালাল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাইরোল আরিফাইন সাহারি উপস্থিত ছিলেন।
মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিরা জানান, বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্যের বাজার বর্তমানে তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৩০ সালের মধ্যে তা পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের বড় বড় হালাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক মালয়েশিয়াতে অবস্থিত, যা বাজারের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। তবে দেশের অবকাঠামো ও হালাল সনদ প্রদানের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমানে দেশীয় প্রতিষ্ঠান মাত্র ১২৪টি হালাল সনদ অর্জন করেছে এবং এটি যথেষ্ট নয়।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, মালয়েশিয়ার সহযোগিতায় দেশের হালাল শিল্পের চাহিদা নির্ধারণ করে উন্নয়নের জন্য রূপরেখা তৈরি করা যেতে পারে। যৌথ উদ্যোগে একটি শক্তিশালী হালাল ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলা সম্ভব।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকটিকে “মূল্যবান শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা” হিসেবে অভিহিত করে মালয়েশিয়ান প্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “এই জ্ঞান আমাদের হালাল পণ্যের ওপর একটি উচ্চশিক্ষার মতো হয়েছে।”
মালয়েশিয়ার ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মহাপরিচালক সিরাজুদ্দিন বিন সুহাইমি জানান, তারা শিগগিরই বাংলাদেশের প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়নের জন্য একটি দল পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের হালাল শিল্পে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা দেশের অর্থনীতি ও রপ্তানি বাজারে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সুযোগ করে দেবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে হালাল পণ্যের অবস্থান শক্তিশালী হবে এবং দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সম্ভাবনা তৈরি হবে।