প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১৬:৫২
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার কারণে তেহরানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৯২ জন বাংলাদেশির একটি তালিকা পাকিস্তানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, যারা ইরান সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করবে এবং সেখান থেকে দুবাই হয়ে আকাশপথে দেশে ফিরবে। এই পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ২৫ জন নাগরিককে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যারা বর্তমানে বিপদাপন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশিদের প্রবেশে সম্মতি দিয়েছে এবং তাদের নিরাপদে চলাচলের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। ইসলামাবাদে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী, এসব নাগরিক প্রথমে স্থলপথে ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত অতিক্রম করবে এবং তারপর আকাশপথে দুবাই হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে।
প্রথম ধাপের ফ্লাইট আগামী ২৫ বা ২৬ জুনের মধ্যে নির্ধারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইসলামাবাদের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। এই ধাপে যারা ফিরবেন তাদের মধ্যে অসুস্থ ব্যক্তি, নারী, শিশু এবং চিকিৎসার জন্য ইরানে থাকা নাগরিকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। পাক সরকারের শর্ত অনুযায়ী, পাকিস্তানে প্রবেশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দেশটি ত্যাগ করতে হবে।
তেহরানে বাংলাদেশের দূতাবাস দেশটিতে অবস্থানরত নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের তথ্য সংগ্রহ করছে এবং ধাপে ধাপে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য দিনক্ষণ চূড়ান্ত করার কাজ চলমান রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশাবাদ ব্যক্ত করেছে, এই পুরো প্রক্রিয়া খুব দ্রুত সম্পন্ন হবে এবং কোনো বাংলাদেশি নাগরিক যেন নিরাপত্তাহীনতায় না পড়ে সে বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, তা থেকে বাংলাদেশিদের রক্ষা করাই এই তৎপরতার মূল উদ্দেশ্য। পরিস্থিতির অবনতি হলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে আরও নাগরিকদের ফেরত আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রবাসীদের অনেকে। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলছেন, এই মুহূর্তে দেশে ফেরার সুযোগ পাওয়াটা তাদের জন্য একরকম জীবন বাঁচানোর সমান। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে এমন সংকটে আরও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেছেন অনেকে।