প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:২৮
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তিনি ফ্যাসিবাদ এবং তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেন। এরই অংশ হিসেবে সারাদেশে চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযানকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, যা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করতে কাজ করছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও তাদের দোসররা দেশব্যাপী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সরকার এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ফ্যাসিবাদীরা জনগণের সম্পদ লুটপাট করে অঢেল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছে এবং যারা তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, তাদেরকে দেশদ্রোহী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তিনি সরকারের লক্ষ্য হিসেবে আইনের আওতায় সকল অপরাধীকে এনে শাস্তি নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব দেন।
অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানটি সারাদেশে সমন্বিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক তদারকি নিশ্চিত করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই অভিযানটি পুলিশের পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে পরিচালনা করবে। এ সময় তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশ কমিশনার এবং জেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের এই অভিযানে সমন্বয় করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যে সকল অপরাধীরা আইনের হাত থেকে মুক্তি পেতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। আদালতের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে এজেন্টদের সঠিক তথ্য দিতে হবে। এছাড়া জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনোভাবেই যেন কোনো সন্ত্রাসী মুক্তি না পায়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ সময় বলেন, “ফ্যাসিস্টদের খণ্ডিত ক্ষমতাকে পুনরায় মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ না দিয়ে সরকার দৃঢ়ভাবে দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।” তিনি সতর্ক করে বলেন, জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে, যেন কোনো অপরাধী জামিন নিয়ে পুনরায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, সঠিকভাবে কাজ করলে দেশে অরাজকতা কমে যাবে এবং জনগণকে মুক্তি দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং গুমের ঘটনা হবে না।
অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে সরকার ফ্যাসিবাদ এবং তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে এবং এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে, যাতে দেশের আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা যায়।