পঞ্চদশ সংশোধনী মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে, এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের প্রশ্নে রায় ঘোষণাকালে এ পর্যবেক্ষণ দেন। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে রায়ের মূল অংশ পাঠ করা হয়।
হাইকোর্টের বেঞ্চ উল্লেখ করেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের রুলে বহু প্রশ্ন উঠে এসেছে, বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিলুপ্তি এবং সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে। আদালত দীর্ঘ ২৩ কার্যদিবসের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিল।
রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বলেন, ‘‘পঞ্চদশ সংশোধনী সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘এ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে, যা সংবিধানের মূল চরিত্রের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’’
এছাড়া, আদালত পক্ষে রাষ্ট্রের বক্তব্য উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া, আর বিএনপির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী।
রুলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসহ পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে ছিল, যার মাধ্যমে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং ইনসানিয়াত বিপ্লবসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল পক্ষভুক্ত হয়। এই রুলের মাধ্যমে সংবিধানের সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল।
গণফোরাম এবং চার আবেদনকারীও ইন্টারভেনর হিসেবে রুলে অংশ নেন। তাদের মধ্যে ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ সহ বিভিন্ন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর রাজনৈতিক মহলে এই সিদ্ধান্ত ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিতে পারে, বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে।
এই রায়ের মাধ্যমে পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে বিচারিক সিদ্ধান্তের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো স্পষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে নতুন এক দিকে নিয়ে যেতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।