বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, দেশটি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সবার শান্তিপূর্ণ অবস্থানের এক অনন্য উদাহরণ। তিনি আরও বলেন, এই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) পর্তুগালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের দশম অ্যালায়েন্স অব সিভিলাইজেশনস (ইউএনএওসি) গ্লোবাল ফোরামে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার বক্তৃতায় দেশের শান্তিপূর্ণ সমাজের কথা তুলে ধরেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বৈচিত্র্যকে সম্মান জানাতে আরো বেশি প্রচেষ্টা চালানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো জলবায়ু ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও মানবিকতা ও সহনশীলতার ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ তিনি উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করেন, ‘‘বাংলাদেশ ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে, যা মানবিক সহায়তার এক অসাধারণ নজির।’’
তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন, যা দারিদ্র্য, বৈষম্য ও পরিবেশগত ক্ষতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে। তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘আমরা একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সবার জন্য ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বিষয়ে সরকার বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তিনি বলেন, ‘‘এআই প্রযুক্তির ভুল ব্যবহার রোধ করতে এবং এর স্থানীয় প্রেক্ষাপট তৈরি করতে সরকার কাজ করছে, যাতে এটি সবার জন্য লাভজনক এবং নিরাপদ হয়।’’
এছাড়া, বিশ্বে যুদ্ধবিগ্রহ, ধর্মীয় বিদ্বেষ এবং গাজার গণহত্যা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের সম্মিলিত আয়োজন ভবিষ্যতে এসব সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’’
উল্লেখযোগ্য যে, পর্তুগালে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে বাংলাদেশ তার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি, মানবিকতা এবং আন্তর্জাতিক শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।