জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত, লিভ টু আপিল মঞ্জুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশেষ প্রতিবেদক - আইন আদালত
প্রকাশিত: সোমবার ১১ই নভেম্বর ২০২৪ ১০:৪০ পূর্বাহ্ন
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত, লিভ টু আপিল মঞ্জুর

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ডের সাজা স্থগিত করেছেন দেশের আপিল বিভাগ। একইসাথে, আদালত তার লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতির আবেদন) মঞ্জুর করেছেন। সোমবার (১১ নভেম্বর) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।


উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। তবে সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি করে ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে। এরপর, ২০১৯ সালে খালেদা জিয়া পৃথক দুটি লিভ টু আপিল দায়ের করেন, যা ৩ নভেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে।


খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন দেশের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, কায়সার কামাল এবং অন্যান্য আইনজীবী। তারা আদালতে উল্লেখ করেন যে, বিচারিক আদালত একতরফা রায় দিয়েছে এবং হাইকোর্টের রায়ে আইনের ত্রুটি রয়েছে। তারা বলেন, "খালেদা জিয়া এই মামলায় অপরাধী নন এবং হাইকোর্টের রায়ের উপস্থাপিত যুক্তিগুলি অস্পষ্ট।"


অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হাসান জানান, মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ফান্ডের টাকা আত্মসাত করা হয়নি। বরং, টাকা আইনসঙ্গতভাবে অ্যাকাউন্টে জমা রাখা হয়েছে এবং কোন ধরনের আত্মসাৎ বা দুর্নীতি প্রমাণিত হয়নি। 


মামলার এজাহার এবং বিচারিক আদালতের রায়ের অংশবিশেষ তুলে ধরে দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, "এখানে কোনও অপরাধের প্রমাণ মেলেনি।" তবে, খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন এই রায়ের বিরোধিতা করে বলেন, "হাইকোর্টের রায় আইনগতভাবে ভুল এবং ত্রুটিপূর্ণ।"


এই মামলাটি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ও আইনগত পটভূমিতে গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালে আদালতের রায়ের পর থেকে তিনি কারাবন্দী ছিলেন, কিন্তু ২০২০ সালে সরকারের পক্ষ থেকে তাকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্যগত কারণে। 


সোমবারের আদেশের পর, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আশাবাদী যে, তার সাজা দ্রুত বাতিল করা হতে পারে, তবে রাষ্ট্রপক্ষও রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।