বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে ক্রেন প্রবেশ করেছে ভাঙা হচ্ছে দেয়াল !

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৫৮ অপরাহ্ন
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে ক্রেন প্রবেশ করেছে ভাঙা হচ্ছে দেয়াল !

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের সামনে একটি ক্রেন প্রবেশ করেছে। বুধবার রাত ১০টা ৫০ মিনিটে ক্রেনটি এলাকায় পৌঁছায়। ক্রেনের সামনে ও পেছনে ছাত্র-জনতার মিছিল দেখা যায়। তবে রাত ১১টা পর্যন্ত ক্রেনটি বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেনি। এ সময় ছাত্রদের ‘শেখ মুজিবের বাড়ি ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।  


অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা ঘোষণা দেন, শেখ হাসিনা যখন বক্তব্য শুরু করবেন, তখনই ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ভবনে ভাঙচুর চালানো হবে। তবে তার আগেই রাত ৮টার দিকে সেখানে ভাঙচুর শুরু হয়। প্রথমে বাড়ির ফটক ভেঙে ফেলা হয়, পরে বাড়ির ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।  


রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ভবনের তৃতীয় তলায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়। রাত সোয়া ৯টার দিকে লাঠিসোঁটা দিয়ে বাড়িটির দেয়াল ভাঙতে শুরু করেন বিক্ষুব্ধরা। সন্ধ্যা ৭টার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।’  


১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবার ও স্বজনদের হত্যা করা হয়েছিল এই বাড়িতে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখান থেকেই তিনি বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিতেন। পরবর্তীতে বাড়িটিকে স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হয়।  


গত জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। এরপর থেকে বাড়িটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।  


তবে সাম্প্রতিক এই ঘটনার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তবে এখনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়নি।  


স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার পর থেকেই এলাকায় বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে থাকে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভবনের সামনে স্লোগান দিতে থাকে, কেউ লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রস্তুত ছিল। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।  


এখনো ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে তা নিয়ে জনমনে উৎকণ্ঠা রয়েছে।