নোয়াখালীর চাটখিলে নিখোঁজের চার দিন পর সাবেক এক মাদরাসা শিক্ষকের মরদেহ পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত আবুবকর ছিদ্দিক ওরফে ছিদ্দিক উল্যাহ মাস্টার (৮০) চাটখিল পৌরসভার ফতেহপুর গ্রামের মৃত মুন্সি আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি স্থানীয় আলীয়া মাদরাসার সাবেক শিক্ষক ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে চাটখিল পৌরসভার সুন্দরপুর এলাকার গৌতম লৌদের বাড়ির পুকুরে মরদেহটি পাওয়া যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আধা কেজি করলা কেনার জন্য বাড়ি থেকে বের হন ছিদ্দিক মাস্টার। তবে বাজার থেকে বাড়ি আর ফেরেননি। পরদিন তাকে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান না পাওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে ১৯ জানুয়ারি চাটখিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। চার দিন পর পুকুরে মাছ ধরতে যাওয়া স্থানীয়রা তার মরদেহ পানিতে ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
চাটখিল থানার ওসি জানান, নিহতের বাম চোখের ওপরে এবং গলায় কিছু আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে কী কারণে এই আঘাত তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত করা যায়নি। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ অস্পষ্ট থাকায় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্থানীয়রা জানান, ছিদ্দিক মাস্টার শান্ত প্রকৃতির মানুষ ছিলেন এবং তার সঙ্গে কারো কোনো বিরোধ ছিল বলে তারা শোনেননি। তার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবার এবং স্থানীয়দের দাবি, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক তথ্য উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ পুকুর সংলগ্ন এলাকায় কিছু স্থান পর্যবেক্ষণ করে এবং সম্ভাব্য কোনো ক্লু খুঁজতে চেষ্টা করে। এদিকে, ছিদ্দিক মাস্টারের নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে পরিবার বেশ চিন্তিত ছিল এবং তার সন্ধান না পাওয়ায় তারা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছিলেন।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, ঘটনাটি গভীরভাবে তদন্ত করা হবে এবং এটি কোনো দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত কিছু, তা ময়নাতদন্ত ও অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত করা হবে। পুলিশ আরও জানায়, এলাকাবাসীর কাছ থেকেও কোনো ধরনের তথ্য পাওয়া গেলে তা তদন্তে সহায়ক হতে পারে।
এদিকে, মরদেহের আঘাতের চিহ্ন নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে গলায় এবং চোখের ওপরের আঘাত নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এটি যদি স্বাভাবিক মৃত্যু না হয়, তবে কারা এর সঙ্গে জড়িত এবং কী উদ্দেশ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে এলাকায় আলোচনা চলছে।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে চাটখিল থানা পুলিশ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।