নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের দয়ারামদি মৌজায় জোরপূর্বক দখল করা ফসলি জমিতে গড়ে তোলা একতা ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং ইটভাটা পুনরায় চালুর অভিযোগ উঠেছে। ৩৮২ শতাংশ ফসলি জমির মালিকেরা এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভাটার মালিকের বিরুদ্ধে জবরদখল ও প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে ইট পোড়ানোর অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে বাটইয়া ইউনিয়নের হাফেজ বাড়িতে জমির মালিক তাজউদ্দিনসহ ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, কিছুদিন আগে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে ইটভাটার চিমনি ভেঙে দেয়। তবে সম্প্রতি মালিক আনোয়ার হোসেন মিরণ কম উচ্চতার নতুন চিমনি নির্মাণ করে পুনরায় ইট পোড়ানো শুরু করেছেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তাজউদ্দিন জানান, তার ৩৮২ শতাংশ ফসলি জমি গত ১৫ বছর ধরে জবরদখল করে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। মালিক আনোয়ার হোসেন মিরণ জমি ছেড়ে দিতে বললে পরিবারসহ তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। ভাটার সরকারি কোনো অনুমোদন বা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ জানালেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
একতা ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের মালিক আনোয়ার হোসেন মিরণ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি জমির মালিকদের কাছে কিছু সময় চেয়েছেন এবং ইটভাটা বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে এটি পারিবারিক বিরোধের কারণে তার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক অভিযোগ বলে দাবি করেন।
এদিকে, কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন জানান, একতা ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং ইটভাটাটি অবৈধ। কিছুদিন আগে অভিযান চালিয়ে চিমনি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। নতুন করে চিমনি নির্মাণ ও ইট পোড়ানোর খবর পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ইটভাটাটি এলাকায় পরিবেশ দূষণ করছে। ধোঁয়া ও কালো ছাইয়ের কারণে আশপাশের জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে এবং বসবাস অনুপযোগী হয়ে উঠছে। প্রশাসনের পদক্ষেপের পরও ভাটা চালু রাখা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
ভুক্তভোগী মালিকেরা জানান, ভাটার মালিক প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা অবিলম্বে ভাটা বন্ধ করে জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান এবং প্রশাসনকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
ইটভাটার অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়রা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।