জঙ্গি দলে যোগদানের অভিযোগে ভারতীয় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদকজয়ী ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম দেবেন্দ্র সিংহ। তিনি শ্রীনগর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকার ডেপুটি সুপারিনটেন্ডেন্ট। শনিবার ভারতের শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ের কুলগামের ওয়াংপো-তে গাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রোববার আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মীরে জঙ্গিদের সঙ্গে একই গাড়িতে যাত্রা করার সময় গ্রেফতার করা হয়েছে পদকজয়ী ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে। উপত্যকা থেকে জঙ্গিরা দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। তবে ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে কী করছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
খবরে বলা হয়, শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ে হয়ে যাওয়ার পথে কুলগামের ওয়াংপো-তে ওই গাড়িটি আটকায় পুলিশ। সেই সময় হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি নাভেদ বাবু ও তার এক সহযোগীর সঙ্গে ওই গাড়িতেই ছিলেন দেবেন্দ্র সিংহ। গত বছর জঙ্গি হামলায় কাশ্মীরে আপেল বাগানে পাঁচ শ্রমিকসহ মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়। উপত্যকার প্রাক্তন স্পেশাল পুলিশ কর্মকর্তা (এসপিও) তথা হিজবুল জঙ্গি নাভেদ বাবুর নেতৃত্বেই সেই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল। তার পর থেকেই তার গতিবিধির ওপর নজর ছিল পুলিশের।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার ফোনে নিজের ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন নাভেদ। তাতেই তার অবস্থান জানতে পারে পুলিশ। সেইসঙ্গে নাভেদরা গাড়িতে চেপে ওয়াংপো যাচ্ছে, তাও জানা যায়। সেই তথ্যের সূত্রেই তল্লাশি চালিয়ে নাভেদ, তার সহযোগী আসিফ এবং দেবেন্দ্র সিংহকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর স্বাধীনতা দিবসে সাহসিকতার জন্য রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদক নিয়েছিলেন দেবেন্দ্র। গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। তার বয়ানের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই শ্রীনগর এবং দক্ষিণ কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। জঙ্গিদের সঙ্গে মিলে দেবেন্দ্র সেগুলো মজুত করে রেখেছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
শ্রীনগরের বাদামিবাগ ক্যান্টনমেন্টে দেবেন্দ্রর বাড়ি থেকেও একটি একে-৪৭ এবং দুটি পিস্তল উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গেছে। নাভেদকে জেরা করে আরও একটি একে-৪৭ এবং পিস্তল উদ্ধার করা হয়। তবে জঙ্গিরা কী উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। রোববার থেকে চার দিনের ছুটির জন্য আবেদন করেছিলেন দেবেন্দ্র। জঙ্গিদের সঙ্গে তিনি কোনো পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে প্রতিবেদনে বলা হয়।
এর আগে ২০১৩ সালে খবরের শিরোনাম হন দেবেন্দ্র। ফাঁসির আগে একটি চিঠিতে তার কথা উল্লেখ করেছিলেন সংসদ ভবন হামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আফজাল গুরু। হামলায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তির দিল্লিতে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে দেবেন্দ্র তাকে অনুরোধ করেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন আফজাল।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।