ইরানের ভুলবশত ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের জেরে বিক্ষোভে উত্তাল তেহরান। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির পদত্যাগ দাবিতে শনিবার রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো মানুষ। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এদিকে এক টুইট বার্তায়, ইরানের জনগণের পাশে আছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ইরানের ভুলবশত ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের কথা স্বীকার করার পর, এর প্রতিবাদে তেহরানের রাস্তায় নামেন শত শত ইরানি। বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান আন্দোলনকারীরা। দেশটির আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা ফার্স নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা এসময় জেনারেল কাসেম সোলাইমানির ছবি ছিঁড়েছেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা, সোলাইমানিকে 'হত্যাকারী' এবং 'স্বৈরশাসকের মৃত্যু হোক।' বলে স্লোগান দেন। এছাড়া ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনিরও পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
এছাড়া আয়াতুল্লাহ খোমেনি ও ইরানের ইসলামিক রেভুল্যাশনারি গার্ডকে (আইআরজিসি) ইরান ছেড়ে চলে যেতে হবে বলে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। তারা আরও বলেন, 'আমরা খুনিদের পক্ষে থাকতে পারি না।' এদিকে তেহরানের এই বিক্ষোভের ভিডিও টুইটারে পোস্ট করে সাংবাদিক হানিফ জাজায়েরি বলেন, 'সোলাইমানি নিহতের পর ইরান নাকি ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু এবার বিষয়টি ভাবুন।' আন্দোলন দমাতে নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বিক্ষোভে সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক টুইট বার্তায়, ইরানের জনগণের পাশে আছেন উল্লেখ করে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিতে তেহরানের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে ওয়াশিংটন বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলেও জানান তিনি। একইভাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানান, খামেনি শাসন ব্যবস্থায় অতিষ্ঠ দেশটির সাধারণ মানুষ। ইরান সরকার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে একটি দেশ পরিচালনা করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। এ ঘটনায় ইরানের দায় স্বীকারের পর ক্ষোভ জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এর দায়ভার তেহরানকেই বহন করতে হবে বলেও জানান তিনি।
জাস্টিন ট্রুডো বলেন, কয়েকজন হতাহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়েছে। তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে এতগুলো নিরীহ মানুষের প্রাণহানি কীভাবে মেনে নেব?
গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) তেহরানের ইমাম খামেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পর ইউক্রেন এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৭৬ আরোহীর সবার মৃত্যু হয়। এতে ৬৩ জন কানাডীয় আরোহী নিহতে শোকে স্তব্ধ দেশটির সাধারণ মানুষ। নিহতদের স্মরণে প্রতিদিনই দেশটির বিভিন্ন জায়গায় শোক সভা চলছে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।