হংকং বিক্ষোভ থেমে যাবে চীন চাইলে ১৫ মিনিটেই : ট্রাম্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ১৬ই আগস্ট ২০১৯ ০২:০৩ অপরাহ্ন
হংকং বিক্ষোভ থেমে যাবে চীন চাইলে ১৫ মিনিটেই : ট্রাম্প

বিতর্কিত অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন নিয়ে দশ সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভে উত্তাল হংকং। কিন্তু চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চাইলে মাত্র ১৫ মিনিটেই এ বিক্ষোভের সমাধান করতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের মরিসটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প এ মন্তব্য করেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ। হংকং বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে চীন সেনা নামাতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ প্রকাশের একদিন পরই বুধবার (১৪ আগস্ট) হংকং সীমান্তসংলগ্ন শেনজেন স্টেডিয়ামে চীনা সরকার দ্বারা শত শত আধা সামরিক পুলিশ (পিএপি) মোতায়েনের ঘটনা ঘটে। কিন্তু বিক্ষোভ দমনে কোনো রকম সহিংসতা দেখতে চান না উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, তিনি ‘মানবিকভাবে এ সমস্যার সমাধান’ দেখতে আগ্রহী। 

হংকং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্টকে সাক্ষাতের আহ্বান জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, আমি উদ্বিগ্ন। আমি চাই না চীন কঠোরভাবে বিক্ষোভ দমন করুক। আমি বাজি ধরে বলতে পারি শি যদি বিক্ষোভকারীদের একদল প্রতিনিধির সঙ্গে বসেন তাহলে ১৫ মিনিটেই এর সমাধান সম্ভব। যদিও আমি জানি, তিনি স্বভাবত এমনটি করেন না, তবে এটি হলে কিন্তু খারাপ হতো না। এর আগে বুধবার এক সাক্ষাতকারে হোইয়াট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনও হংকং পরিস্থিতিতে সেনা হস্তক্ষেপের আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এ ছাড়া চলমান এ সঙ্কট নিয়ে ফ্রান্স, কানাডাসহ পশ্চিমা বিশ্বের বাকি দেশগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব পক্ষকেই সংযমের আহ্বান জানিয়েছে তারা। অপরাধ প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে প্রায় তিন মাস ধরে চলতে থাকা হংকং বিক্ষোভ এখন স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। বিক্ষোভের মুখে অঞ্চলটির প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম ওই বিলকে ‘মৃত’ ঘোষণা করলেও বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন এখন আর থামছে না।

অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী চীন যদি চায় সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিজ ভূ-খণ্ডে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে। আইনে বলা হয়েছে, বেইজিং, ম্যাকাও ও তাইওয়ান থেকে পালিয়ে আসা কোনো অপরাধীকে ফেরত চাইলে তাকে ফেরত দিতে হবে।২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক তরুণ তাইওয়ানে এক নারীকে হত্যা করে হংকংয়ে চলে আসেন পালিয়ে। তখন তরুণকে বিচারের মুখোমুখি করতে তাইওয়ান ফেরত চাইলে হংকং আইনি জটিলতার কথা বলে। এ প্রেক্ষাপটে প্রত্যর্পণ আইনটি হংকংয়ের নিজস্ব আইনে প্রণীত করার প্রস্তাব আসে।সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত হংকং ১৯৭৭ সালে চীনের অধীনে ফেরার পর থেকে ‘এক রাষ্ট্র দুই নীতি’র অধীনে পরিচালিত। যদিও গত দুই দশক ধরে অপরাধী প্রত্যর্পণ বিষয় নিয়ে চীনা সরকারের সঙ্গে কড়াকড়ি চলছে অঞ্চলটির।১৯৯৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে চীনের সঙ্গে যুক্ত হয় হংকং। ওই সময়ের পর এ আন্দোলন ঘিরেই সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে হংকং। এ আন্দোলনের মাধ্যমেই সাত বছরের শাসনামলে সবচেয়ে বড় জনবিরোধের মুখে পড়েছেন শি জিনপিং।