প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৭
অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং প্রতিদিনই বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যা। সর্বশেষ হামলায় আরও ৭৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আনাদোলু বার্তা সংস্থা। এতে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ১৪১ জনে, যা গত দু’বছরের ধারাবাহিক হামলার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতদের পাশাপাশি আরও ২২৮ জন আহত হয়েছেন। আহতদের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে কারণ অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন এবং পর্যাপ্ত উদ্ধারকর্মী ও সরঞ্জামের অভাবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।
একই সময়ে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও নয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৩৩ জন। এ ধরনের সহিংসতায় ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫১৩ জনে এবং আহত হয়েছেন ১৮ হাজার ৪১৪ জনের বেশি।
অপুষ্টি ও অনাহারে ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছেন আরও চারজন, যার মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অনাহারে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৩৫ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে ১৪৭টি শিশু।
এই হত্যাযজ্ঞ ও মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহল গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তবুও থামেনি ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হলেও পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেনি। বরং প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল এবং অনাহারে মৃত্যুবরণ করছে অসংখ্য শিশু।
এদিকে আন্তর্জাতিক মহলে গাজা নিয়ে তীব্র নিন্দার ঝড় বইছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং বিশ্ব নেতারা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছেন। তবুও বাস্তবে খুব বেশি পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবিলম্বে গাজায় মানবিক সহায়তার করিডোর খুলে দেওয়া এবং হামলা বন্ধ করা না হলে প্রাণহানির সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের চাপ ও সহানুভূতিই এখন গাজা উপত্যকার সাধারণ মানুষের বাঁচার শেষ আশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।