প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩
মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে প্রশংসা করেছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যাওয়া এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোরও প্রশংসা করা হয়েছে। রোববার (২৪ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক প্রেস বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন টমাস “টমি” পিগট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের জনগণের প্রতি গভীর সংহতি প্রকাশ করছে। এর মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী, যারা সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলো যারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছে ওয়াশিংটন।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে এবং আশ্রয় নেয়। এর আগে থেকেই বাংলাদেশে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছিল। এই কঠিন পরিস্থিতিতে দেশটি মানবিক ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করেছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত।
বাংলাদেশে আশ্রয়প্রাপ্ত রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রা সহজ করতে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা নানা ধরনের সহায়তা প্রদান করছে। শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে খাবার, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
প্রতি বছর নতুন করে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নিচ্ছে ক্যাম্পগুলোতে। এর ফলে বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রাপ্ত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। নতুন আসা রোহিঙ্গারা অতীতের ত্রাস এবং ঝুঁকির কথা স্মরণ রেখে আশ্রয় গ্রহণ করছে।
রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা এবং বাংলাদেশ সরকারের মানবিক ভূমিকা তাদের জন্য জীবন ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা তৈরি করেছে। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, বিশ্ব রোহিঙ্গাদের জন্য স্থায়ী সমাধান নিয়ে আসবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রশংসা বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকাকে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করছে। পাশাপাশি, এটি অন্য দেশগুলোকেও রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুপ্রাণিত করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং মানবিক দায়িত্ব পালন করাই এই প্রশংসার মূল কারণ।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে পুনর্বাসন এবং শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ চলতে থাকবে। বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো একত্রে রোহিঙ্গাদের জীবনের মান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।