প্রকাশ: ৯ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩৪
ফিলিস্তিনের গাজার উপত্যকায় শুক্রবার ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত ৭২ জন নিহত এবং আরও ৩১৪ জন আহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। সন্ধ্যার পর প্রকাশিত এই তথ্য অনুযায়ী, হতাহতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজার উপর ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) অভিযান শুরু হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, শুক্রবারের হামলার পর থেকে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৩৩০ জনে। পাশাপাশি আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯ জনে পৌঁছেছে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, হাসপাতালগুলিতে যেসব মৃত ও আহতদের আনা সম্ভব হয়েছে শুধু তাদের হিসেব রাখা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে ও সড়কে বহু মৃতদেহ এখনও উদ্ধার হয়নি, যা প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হচ্ছে না। এতে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর পাশাপাশি খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রীর প্রবেশও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরায়েল। এর ফলে গাজার অধিবাসীদের মধ্যে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, অপুষ্টিতে মারা গেছে ২০১ জন, যার মধ্যে ৯৮ জন শিশু।
ত্রাণ সামগ্রী নিতে গিয়ে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর তথ্যও মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ১ হাজার ৭৭২ জন ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত হয়েছে, তার মধ্যে শুক্রবার নিহতের সংখ্যা ১৬ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হঠাৎ আক্রমণ চালায়। হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি নিয়ে যায়। জবাব হিসেবে ইসরায়েল ওই দিন থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে।
১৫ মাসের যুদ্ধবিরতির পর ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও মার্চ থেকে পুনরায় গাজায় অভিযান চালাচ্ছে। দ্বিতীয় দফার এই অভিযানে পাঁচ মাসে নিহত হয়েছে ৯ হাজার ৮২৪ জন এবং আহত হয়েছে ৪০ হাজারের বেশি।
জিম্মি ব্যক্তিদের উদ্ধার এবং হামাস দুর্বল করতে অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধবিরতি ও শান্তির আহ্বান জানিয়েছে, তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। পরিস্থিতি গুরুতর এবং গাজার সাধারণ জনগণের দুর্দশা ক্রমেই বাড়ছে।