প্রকাশ: ৭ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪৮
বাংলাদেশের আগামীর নেতৃত্ব তরুণদের হাতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের উচিত এ প্রজন্মের আবেগ ও প্রত্যাশাকে সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাস্তবভিত্তিক সম্পর্ক গড়ে তোলা। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও যেভাবে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দেওয়া হয়েছে, তার যথাযথ সাড়া না দিয়ে ভারত নিজেরাই এই সম্পর্কের দূরত্ব বাড়িয়ে তুলেছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সময় গণভবনের দিকে যাত্রা করে জনতার ঢল। সেই উত্তাল দিনে শেখ হাসিনা তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সামরিক হেলিকপ্টারে চেপে ভারতে পালিয়ে যান। এই ঘটনাই পরবর্তীতে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও তিক্ত করে তোলে।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শুরু হয় নেতিবাচক প্রচারণা। রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায় থেকে বারবার সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও দিল্লির পক্ষ থেকে তার কোনো ইতিবাচক প্রতিফলন দেখা যায়নি।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একাধিকবার কূটনৈতিকভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হলেও ভারত এখনো সে চিঠির জবাব দেয়নি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারপ্রক্রিয়ায় আনার বিষয়ে বাংলাদেশ এখনও আশাবাদী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের উচিত ছিল বাংলাদেশের জনগণের মুড অনুধাবন করা। নতুন নেতৃত্ব ও তরুণদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া ছিল দুই দেশের জন্যই লাভজনক। কিন্তু গত এক বছরে ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতি বাংলাদেশ ইস্যুতে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি আনতে পারেনি।
অধ্যাপক এনামুল হক মনে করেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পরিবর্তিত নেতৃত্বকে সম্মান করা এবং নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া ভারতের কূটনৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। দিল্লির নীরব অবস্থান সম্পর্কের ভবিষ্যতের জন্যও হুমকি।
সাবেক কূটনীতিক হুমায়ূন কবির মনে করেন, তরুণদের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলেও বাংলাদেশ তা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। তবে এজন্য অংশীদার রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন, যাতে সম্মিলিতভাবে অগ্রসর হওয়া যায়।
এই প্রেক্ষাপটে তরুণ নেতৃত্বের বাংলাদেশকে সম্মান জানিয়ে ভারতকে ভবিষ্যতের সম্পর্কে বাস্তবমুখী ও নীতিনির্ধারক ভূমিকায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।