প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ২১:৩৪
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সাম্প্রতিক বিমান হামলার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন। সোমবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি বাংলা জানায়, এই বৈঠক মূলত মধ্যপ্রাচ্যের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং এর সম্ভাব্য আঞ্চলিক প্রভাব নিয়ে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে। পাকিস্তান সরকার এর আগে রোববার প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের কঠোর নিন্দা জানিয়েছিল, একে ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত সহিংসতা বলে অভিহিত করে। ইসলামাবাদ বলছে, ইরানের বিরুদ্ধে এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক আচরণের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ সম্প্রতি ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেকশিয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ইরানের প্রতি সংহতি ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এই বৈঠকের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি বার্তা দিতে চান যে পাকিস্তান তার প্রতিবেশী দেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী এবং কোনও সামরিক আগ্রাসন মেনে নেবে না। ইসলামাবাদ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের ভূখণ্ডে হামলা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আরও দুর্বল করে তুলতে পারে, যা সমগ্র অঞ্চলের জন্য হুমকিস্বরূপ।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, হামলার মাত্র একদিন আগেই পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘সত্যিকারের শান্তির দূত’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল এবং তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়নের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু এই ভূমিকায় হঠাৎ পরিবর্তন এনে ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র যখন ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, তখন ইসলামাবাদ এই ঘটনাকে ‘বর্বরতা’ বলে আখ্যা দেয় এবং এর কঠোর প্রতিবাদ জানায়। এই নীতিগত পালাবদল নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তান এখন জটিল কূটনৈতিক সমীকরণের মধ্যে পড়েছে। একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক, অন্যদিকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে আধ্যাত্মিক ও আঞ্চলিক সংহতি—এই দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতিতে এখন ভারসাম্য রক্ষা করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইসাথে মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পাকিস্তান নিজেদের ভূমিকা আরও স্পষ্ট করার চাপের মুখে রয়েছে।
সূত্র ঃ বিবিসি বাংলা