প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ২০:২
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা যখন নতুন মাত্রা নিচ্ছে, তখন সেই সংঘাতের আঁচ পড়তে শুরু করেছে প্রতিবেশী দেশগুলোর উপরেও। এমন এক পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য যুদ্ধের আশঙ্কা মাথায় রেখে তুরস্ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে এবং সীমান্তে সেনা মোতায়েন ও নজরদারি বাড়িয়েছে। রয়টার্সের বরাত দিয়ে জানা গেছে, তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি গোপন সূত্র জানিয়েছে যে তারা ইরানের সঙ্গে তাদের সীমান্ত অঞ্চলে সুরক্ষা ব্যবস্থা নতুনভাবে ঢেলে সাজাচ্ছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বহুমাত্রিক রাডার সিস্টেম ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার সময় তুরস্কের দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল যুদ্ধবিমানগুলো আকাশসীমায় টহল দিচ্ছিল যাতে কেউ সীমান্ত অতিক্রম করলে সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিতে পারে। তবে এখনো পর্যন্ত ইরান থেকে তুরস্কে কোনো ধরনের বড় ধরনের শরণার্থী প্রবাহ দেখা যায়নি।
আঙ্কারা সরাসরি এই যুদ্ধে জড়ায়নি ঠিকই, তবে দেশটির সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে যেকোনো সামরিক সংঘাত তাদের নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই প্রতিরক্ষায় আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি। এ ছাড়াও সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন এবং টহল বাড়ানো হয়েছে যাতে আগাম যেকোনো হুমকি মোকাবিলা সম্ভব হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার টেলিফোনে আলাপ করেছেন।
এই আলোচনাগুলোতে তিনি যুদ্ধ পরিস্থিতি এড়িয়ে কূটনৈতিক সমাধানের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তুরস্কের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা যেকোনো মূল্যে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে চায়।
বর্তমানে বিশ্ব রাজনীতির এই জটিল সমীকরণে তুরস্কের কৌশল ও অবস্থান শুধু তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নয়, বরং পুরো অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। যুদ্ধ এড়িয়ে স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে তুরস্কের এই প্রস্তুতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে।