অটিজমে আক্রান্ত শিশুর কোরআন হিফজ, মালয়েশিয়ায় আলোড়ন

আহমাদের অটিজম ধরা পড়ে সাত বছর বয়সে। এরপর অনেকেই হয়তো ধরে নিয়েছিলেন, তার সম্ভাবনার পরিসর সীমিত। কিন্তু সেই ধারণাকে চূর্ণ করে সে চার মাস দশ দিনে পুরো কোরআন মুখস্থ করে। গত ২৩ মার্চ আল-কোরআন আমালিল্লাহ একাডেমিতে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার এই অর্জন উদযাপন করা হয়।  

তার মা নুরুল শাহিদা লুকমান জানান, ছোটবেলা থেকেই কোরআনের প্রতি জিয়্যাদের বিশেষ আকর্ষণ ছিল। মাত্র আট মাস বয়সেই কোরআন তিলাওয়াতে কোনো আয়াত বাদ পড়লে কেঁদে ফেলত। আর দুই বছর বয়সে শুনে শুনেই ৪২টি আয়াত মুখস্থ করে ফেলে। সন্তানকে এই পথে এগিয়ে নিতে তারা কোটা ভারু ছেড়ে মারাং-এ অস্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।  

শুধু মুখস্থ করাই নয়, হাফেজ হওয়ার পর তার ব্যক্তিত্বেও পরিবর্তন এসেছে। এখন সে নিয়মিত নামাজ আদায় করে এবং আবেগগতভাবে অধিক পরিণত আচরণ করে। এতে করে তার মা এবং শিক্ষকরা আরও বেশি আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।  

তার শিক্ষক নুরফাতিহার রিদওয়ান বলেন, জিয়্যাদ প্রতিদিন মাত্র ১৫ থেকে ৩০ মিনিটেই একটি পৃষ্ঠা মুখস্থ করতে পারত। এমনকি কোনো কোনো সময়ে সে একদিনেই সম্পূর্ণ একটি সূরা হিফজ করত, যা ছিল অভূতপূর্ব।  

বিশেষজ্ঞদের মতে, জিয়্যাদের ‘হাইপারলেক্সিয়া’ ও ‘হাইপারনিউমেরেসি’ নামক মানসিক বৈশিষ্ট্য তাকে অল্প সময়ে অসাধারণ দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করেছে। এর ফলে কোরআনের আয়াত পড়া ও মুখস্থ করা তার জন্য সহজতর হয়।  

বর্তমানে আহমাদ জিয়্যাদ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে গেছে এবং সেখানে সে তার সহপাঠীদের মাঝে হয়ে উঠেছে এক অনুকরণীয় আদর্শ। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে আরও বেশি কোরআনের জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী হয়ে উঠছে।  

এই গল্প আমাদের শিখিয়ে দেয়, শারীরিক বা মানসিক কোনো বাধাই যদি সঠিক দিকনির্দেশনা, আত্মবিশ্বাস ও পরিবারিক সহযোগিতা থাকে, তাহলে তা সাফল্যের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।