ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দীঘলগ্রামে সংঘর্ষের জেরে বাদশা মোল্যা নামে একজন নিহত হওয়ার পর পুরো গ্রামটি আতঙ্ক আর মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। প্রতিপক্ষের হামলায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে, আর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আশ্রয়হীন অবস্থায় শীতের মধ্যে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৬ ডিসেম্বর বিকেলে গরু চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে গুরুতর আহত হন বাদশা মোল্যা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। এ ঘটনার পর থেকে তার সমর্থকরা প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে একতলা পাকা ভবনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়।
গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, হামলার শিকার পরিবারগুলো বাড়িঘর হারিয়ে অন্যত্র আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে রহিম মোল্যার ছেলে টিপু সুলতান, টিটুল, মিটুল, ছনো মোল্যার ছেলে নুর ইসলামসহ আরও অনেকে রয়েছেন। তাদের কেউ কেউ জানান, বাড়ি ভেঙে দেওয়ার পর তাদের সব কিছু শেষ হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত টুম্পা খাতুন বলেন, “আমরা যদি অন্যায় করে থাকি, তবে তার বিচার হোক। কিন্তু আমাদের বাড়িঘর তো অন্যায় করেনি। সব কিছুই মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা কীভাবে বাঁচব?”
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ খান বলেন, “সামাজিক বিরোধের জেরে হত্যার পর বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর শৈলকুপায় নতুন নয়। তবে এই ঘটনায় কেউ অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।”
এদিকে বাদশা মোল্যার ভাই মিরাজ মোল্যা বাদী হয়ে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় ২৭ জন ইতোমধ্যে জেল হাজতে রয়েছেন।
গ্রামের এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, পুলিশ সময়মতো ব্যবস্থা নিলে হয়তো এত বড় ক্ষতি হতো না।
বর্তমানে গ্রামটি পুরুষশূন্য। বাড়িঘরহীন পরিবারগুলো সহায়তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিদের দিকে তাকিয়ে আছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।