প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২২, ১:৩৫
মধ্যযুগের কথা মনে করাচ্ছে পুনের একটি ঘটনা। কুসংস্কার যে কতটা সর্বগ্রাসী হতে পারে, তার প্রমাণ রত্নাগিরির এই শিউড়ে ওঠার মত কাহিনী। পুত্র সন্তান চাই। কেবল মাত্র এই চাহিদা থেকে মারাত্মক নিগ্রহের মুখে পড়লেন এক গৃহবধূ। তাঁকে প্রকাশ্য দিনের আলোয় ঝরণার নীচে বিবস্ত্র হয়ে স্নান করতে হল। বলা ভাল, বাধ্য হলেন। কারন নির্দেশ দিলেন তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি। এমনটাই অভিযোগ করেছেন, মহারাষ্ট্রের পুনের বাসিন্দার নন্দাভীর। সংবাদ সংস্থা খবর, পারিবারিক পূজার ‘আচার’ স্বরূপ রত্নাগিরি জেলার মালেস্বর জলপ্রপাতের নীচে দাড়িয়ে প্রায় নগ্ন অবস্থায় স্নান করতে বাধ্য হয়েছিলেন ৩৮ বছর বয়সী সেই মহিলা। এরপরই তিনি থানায় তাঁর স্বামী এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
নন্দাভীর দাবি, ২০১৩ সালে একজন নামকরা ব্যাবসায়ীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর এক বছরের মাথায় শুরু হয় তাঁর উপর নৃশংস অত্যাচার। এরপর পুত্র সন্তানের জন্ম না দিতে পারার জন্যও দিনের পর দিন সহ্য করতে হয়েছে মারধর। তিনি জানান, দীর্ঘ দিন ধরে পুত্র সন্তানের জন্ম না দিতে পারার জন্য তাঁকে কোলহাপুর জেলার জয়সিংহপুরের এক ধর্মগুরুর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে দেখে সেই গুরু মওলানা বাবা জমাদার, বাড়িতে একটি পূজার আয়োজন করতে বলেন। যার আচারস্বরুপ জলপ্রপাতের নীচে সর্বসমক্ষে নগ্ন হয়ে স্নান করার নির্দেশ দেন।
নিগৃহীতার অভিযোগ, এর আগেও তাঁর স্বামী ব্যবসার লোকসানের কারণে তাঁর সোনার অলংকার বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এছাড়াও,তাঁর স্বাক্ষর জাল করে তাঁর বাবা মায়ের দেওয়া সম্পত্তি বন্ধক রেখে ব্যঙ্ক থেকে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। গত ২১ অগস্ট এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মহিলার অভিযোগ দায়ের করার পরই, পুনের ভারতী বিদ্যাপীঠ থানার পুলিস তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নেয়। ইতিমধ্যেই ভারতীয় দণ্ডবিধির এবং ব্ল্যাক ম্যাজিক অ্যাক্টের বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয়েছে মহিলার স্বামী ও শাশুড়িসহ আরও একজনকে। তবে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি সেই ধর্মগুরু মওলানা বাবাকে। মামলার তদন্ত করছেন পুনের পুলিস পরিদর্শক জগন্নাথ কালস্কার।