গবেষণা: শৌচাগারের চেয়ে বেশি জীবাণু স্মার্টফোনে!

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ১৩ই জানুয়ারী ২০১৯ ০৬:৩৩ অপরাহ্ন
গবেষণা: শৌচাগারের চেয়ে বেশি জীবাণু স্মার্টফোনে!

বর্তমান এই প্রযুক্তির যুগে মোবাইল ছাড়া একদিনও যেন চলা দায়।মোবাইল ফোন ব্যবহারে আমরা এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে,মোবাইল ছাড়া নিজেকে অসহায় মনে করেন অনেক। আবার এই মোবাইলের যততত্র ব্যবহারের নিজের অজান্তেই আপনি বহন করছেন জীবাণু। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন,মোবাইল ফোনের ব্যবহারে সঙ্গে বাড়ছে জীবাণু সংক্রমণের শঙ্কা। সম্প্রতি বিদেশের বিভিন্ন সমীক্ষায় জানা গেছে এসব তথ্য। প্রযুক্তির এই যুগে উন্নত দেশের নাগরিকেরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে।এই মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে লেগে থাকা জীবাণু নাকি শৌচাগারের কমোডের থেকে অনেক বেশি। এসব জীবাণুর মধ্যে রয়েছে ক্ষতিকর ‘ই কোলাই’-সহ নানা ধরনের রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়াও। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এবং ট্রপিক্যাল মেডিসিনের সমীক্ষা ২০১১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশটির ব্যবহৃত ছয়টি মোবাইলের মধ্যে একটি মোবাইলে ফিক্যাল ব্যাক্টেরিয়া (মল থেকে উৎপন্ন) রয়েছে।এছাড়া ই-কোলাইয়ের মতো ব্যাক্টেরিয়াও পাওয়া গেছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মোবাইল ব্যবহারের পর আমরা তা অনেক সময় এমনই জায়গায় রাখি। যে জায়গা থেকে শিশুরা তা ধরে ও খেলা করে। ফলে তাদের হাতে জীবাণু লেগে যায়। এছাড়া শৌচাগারে গেলে ভালোভাবে হাত ধুলে জীবাণু থাকে না। কিন্তু মোবাইল ফোন তো ধোয়া যায় না। এছাড়া মোবাইল ফোনের কাভারো ধোয়া যায় না। এর চারপাশে আপনার অজান্তেই লেগে থাকে জীবাণু। ব্রিটেনের অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাক্টিরিয়োলজির অধ্যাপক হিউ পেনিংটন বলেন, দিনের মধ্যে বহুবার শরীরের সংস্পর্শে আসে। তাই সংক্রমণের আশংকা বাড়ে।

যেভাবে মোবাইল ব্যবহার করবেন: তাহলে মোবাইল ব্যবহার কলকাতার অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব পাবলিক হেল্‌থ অ্যান্ড হাইজিনের বিজ্ঞানী মধুমিতা দুবে বলেন, মোবাইলের ব্যবহার তো বন্ধ করা যাবে না। তবে বিপদ রুখতে নিয়ম করে হাত-পা-মুখ ধোয়ার মতো স্বাস্থ্য-সচেতনতা জরুরি। তিনি বলেন, শৌচাগার থেকে বেরিয়ে ঠিকমতো হাত না-ধুলে বা শৌচাগারে মোবাইল নিয়ে গেলে তার মাধ্যমে নানা ধরনের ক্ষতিকর ব্যাক্টিরিয়া ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। সব সময় হয়তো সঙ্গে সঙ্গে রোগ দেখা দেবে না। কিন্তু বিপদের ঝুঁকি থেকেই যায়।’ জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, অ্যাসিনেটোব্যাক্টর, সিউডোমোনাস, স্টেফাইলোকক্কাসের মতো ব্যাক্টেরিয়া এভাবে বেশি ছড়ায়। সর্বত্র ব্যবহারের ফলে মোবাইল হয়ে উঠছে জীবাণুর অন্যতম বাহক। শিশুরা যে কোনো জিনিস বারবার মুখে দেয়। তাই ওদের মোবাইল দেওয়া উচিত নয়। আমজনতা, চিকিৎসক— সব তরফেই এই বিষয়ে আরও সচেতনতা জরুরি। শুধু শিশু নয়, এই জীবাণু সব বয়সের মানুষেরই ক্ষতি করতে পারে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব