দিনাজপুরের বিরামপুরে রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় একটি পাথরবোঝাই ট্রাকের চালক ও হেলপার নিহত হয়েছেন। সোমবার রাত ১টার দিকে ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে ট্রাকটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই হেলপার মারা যান এবং গুরুতর আহত চালককে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত হেলপারের নাম আরিফ হোসেন, তার বাড়ি পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায়। তবে ট্রাকচালকের পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, বিরামপুরের ঘোড়াঘাট এলাকায় রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রেনটি ট্রাকটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রাকটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং হেলপার ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, রেলক্রসিংয়ের গেটম্যান গেট ফেলে রাখেননি, যার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে গেটম্যান পলাতক রয়েছেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার ওসি ফখরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, গেটম্যানের অবহেলার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি গাফিলতির প্রমাণ মেলে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে দুর্ঘটনার কারণে রাতভর ট্রেন চলাচল সাময়িক বন্ধ ছিল। তবে ভোর থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। দুর্ঘটনার পর রাস্তার ওপর ট্রাকটি পড়ে থাকায় দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ট্রাকটিকে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি পাথর আনলোডের কাজ চলছে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
স্থানীয়রা দাবি করেছেন, রেলক্রসিংয়ে নিয়মিত গেটম্যানের দায়িত্বে অবহেলা দেখা যায়, যার ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তারা দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, যদি রেলক্রসিংয়ে গেটম্যান সতর্ক থাকতেন, তবে এই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো। তারা বলেছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাফিলতির অভিযোগ গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা এড়ানো যায়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।