মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় মোবাইল চুরির অপবাদ সইতে না পেরে মো. সায়ান আহমেদ (২২) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের পূর্ব ফটিগুলি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সায়ান আহমেদ ওই গ্রামের মো. ইরা মিয়া ও মিনারা বেগমের ছেলে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বুধবার রাত ১০টার দিকে সায়ান পূর্ব ফটিগুলি গ্রামের বাজারের একটি দোকানে মোবাইল রিচার্জ কার্ড কিনতে যান। ওই সময় বাবুল মিয়া ও আরও কয়েকজন ক্রেতা দোকানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বাবুলের মুঠোফোনটি হারিয়ে গেলে উপস্থিত সবাই সায়ানকে দোষারোপ করেন এবং তাকে মারধর করেন। পরিবারের সদস্যদেরও খবর দেওয়া হয়, তবে পরে মুঠোফোনটি উদ্ধার হয়। পরিবারের লোকজন সায়ানকে দোকান থেকে মুক্ত করে বাড়িতে নিয়ে যান।
এ ঘটনার পর সায়ান মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। রাতে, তার পরিবার অজান্তে, সায়ান নিজ বসতঘরের তীরের সঙ্গে কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আপছার বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, সায়ানের আত্মহত্যার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বিষয় নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। মোহাম্মদ আহমেদ রিয়াজ নামে এক ব্যক্তি তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, "এটি আত্মহত্যা নয়, বরং হত্যার মতো ঘটনা। প্রমাণ ছাড়া একজনকে চোর বলা এবং মারধর করা আইনগতভাবে সঠিক নয়।"
তিনি সায়ানের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে বলেন, "সে যদি নিরপরাধ হয়ে থাকে, তবে কেন তাকে চুরির অপবাদ দিয়ে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়া হলো? এর সুষ্ঠু তদন্ত এবং অপরাধীদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।"
এদিকে, নিহত সায়ানের পরিবারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। সায়ানের আত্মহত্যার পেছনে অন্য কারো হাত রয়েছে কি না, তা তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।