বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বড় পরিবর্তন এসেছে, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা’। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের প্রধান এই স্টেডিয়াম এখন থেকে নতুন নামে পরিচিত হবে। দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধুর নামে পরিচিত এই স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন নিয়ে নানা আলোচনা চলছিল, শেষ পর্যন্ত সরকারিভাবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হলো।
১৯৫৪ সালে ‘ঢাকা স্টেডিয়াম’ নামে যাত্রা শুরু করা এই ঐতিহ্যবাহী ভেন্যুর নাম ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধুর নামে পরিবর্তন করেছিল। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় বিদায়ী সরকারের পরিবারের নামে থাকা স্থাপনাগুলোর নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে এবার নতুন পরিচয় পেল দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম প্রধান ভেন্যু, যা ‘জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা’ নামে পরিচিত হবে।
সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শুধু এই স্টেডিয়াম নয়, উপজেলা পর্যায়ের ১৫০টি ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম’-এর নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় এবার দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া স্থাপনাটির নামও বদলানো হলো। সরকারের দাবি, ক্রীড়াঙ্গনকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, ঐতিহ্যবাহী নাম পরিবর্তন করা অনাকাঙ্ক্ষিত, আবার অনেকেই বলছেন, ক্রীড়াঙ্গনকে নিরপেক্ষ ও সকলের জন্য গ্রহণযোগ্য করতে এটি প্রয়োজনীয় ছিল।
বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিষদের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন নামকরণের ফলে স্টেডিয়ামের প্রশাসনিক কার্যক্রমে কোনো পরিবর্তন আসবে না। শুধু আনুষ্ঠানিক নথিপত্র এবং সাইনবোর্ডে নতুন নাম ব্যবহৃত হবে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়ও ‘জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা’ নামটি বহাল থাকবে।
এদিকে ক্রীড়াঙ্গনের বিশ্লেষকরা বলছেন, কেবল নাম পরিবর্তনই যথেষ্ট নয়, স্টেডিয়ামের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং আধুনিকায়নের দিকেও সরকারের নজর দেওয়া উচিত। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে স্টেডিয়ামের বিভিন্ন অংশ জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে, যা দ্রুত মেরামত করা দরকার।
এ বিষয়ে একজন সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক মন্তব্য করেছেন, “নামের পরিবর্তন নিয়ে যত বিতর্কই থাকুক, ক্রীড়াঙ্গনের প্রকৃত উন্নয়ন হওয়া জরুরি। মাঠ ও দর্শক গ্যালারির সংস্কার না হলে শুধু নাম পরিবর্তন করে কোনো বাস্তবিক পরিবর্তন আসবে না।”
সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, নাম পরিবর্তনের পাশাপাশি স্টেডিয়ামের আধুনিকায়নের পরিকল্পনাও রয়েছে। নতুন পরিচয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক মানের একটি ক্রীড়া ভেন্যুতে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।