পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে তার সমর্থকরা রাজধানী ইসলামাবাদে বিক্ষোভ করতে চেয়েছিলেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোববার ইসলামাবাদে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
ইমরান খানের সমর্থকরা দাবি করছেন, চলমান সরকার শেহবাজ শরিফের অধীনে নির্বাচনে জালিয়াতি করেছে এবং তারা অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। তারা আরও দাবি করছেন, ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই দলের সকল বন্দি নেতাকে মুক্তি দিতে হবে।
বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, ইমরান খানের হাজার হাজার সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, যাদের মধ্যে পিটিআই দলের পাঁচজন সংসদ সদস্যও রয়েছেন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বহু কর্মী আছেন।
নিরাপত্তার কারণে ইসলামাবাদে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং পুরো শহরজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেকোনো ধরনের জমায়েত বা বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বিক্ষোভের পেছনে থাকা খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর একটি ভিডিও বার্তায় জনগণকে শহরের ডি চকে জমায়েত হতে এবং আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, ইমরান খান তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দাবিগুলি পূর্ণ না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা অবস্থান চালিয়ে যাবেন।
এর আগে গত অক্টোবর মাসেও ইসলামাবাদে ইমরান খানের সমর্থকদের বিক্ষোভকে সহিংসতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সে সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী আহত হন। পুলিশ তখন দাবি করেছিল যে, এই বিক্ষোভ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংঘর্ষ সৃষ্টি করতে আয়োজন করা হয়েছিল, যা পরে সহিংসতার রূপ নেয়।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অযোগ্যতার অভিযোগে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে ১৫০টি মামলা করা হয়েছে। ২০২২ সালে তিনি সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবে পরাজিত হয়ে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ২০২৩ সালের মধ্যে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। আদালত তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে, যদিও ইমরান খানের সমর্থকরা এই মামলাগুলিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজানো বলে দাবি করেছেন।
গত ডিসেম্বরে ইমরান খান জামিন পেলেও আইনি জটিলতার কারণে তিনি মুক্তি পাননি। তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইমরান। পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, এবং তার মুক্তি নিয়ে সমর্থকদের আন্দোলন আরও তীব্র হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।