চট্টগ্রাম শহরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ এবং সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রামের জামালখান এলাকায় তার অনুসারীরা সমবেত হতে শুরু করেন। পরে সন্ধ্যায় চেরাগী মোড়ে এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিতরা 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান দিয়ে তার মুক্তির দাবি জানান।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তাকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, পুলিশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আদালতের নির্দেশে তাকে হস্তান্তর করা হবে। তার গ্রেপ্তারের খবর জানার পর থেকেই সনাতনী ধর্মাবলম্বী সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এদিকে, বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে, যেখানে তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে। সংগঠনটির দাবি, এই গ্রেপ্তার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
চিন্ময়ের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। তাদের সমন্বয়ক কাঞ্চন আচার্য্য কালবেলা জানান, “আমাদের মুখপাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।” এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণ থাকার ঘোষণা দিলেও, পুলিশ ঘটনাস্থলে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে যাতে পরিস্থিতি উগ্র না হয়ে ওঠে।
এছাড়া, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজেশ চৌধুরী এবং হৃদয় দাশসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। চিন্ময়ের গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন জেলার সনাতনী ধর্মাবলম্বী সংগঠনগুলোও প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে।
এদিকে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত অভিযোগগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে, এই গ্রেপ্তারকে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার সৃষ্টি হিসেবে দেখছে অনেকেই।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।