মাহে রমজানের সওগাতঃ মহান আল্লাহ তায়ালা মানব জাতীর সফলতা, কল্যান, উন্নতি, অগ্রগতী, সুখ- শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য কুরআনের আহকাম সমূহ রমজান মাসে অবর্তীন করেন। যার মাধ্যমে মানুষ মানুষের প্রতি প্রেম, ভালবাসা, স্নেহ, শ্রদ্ধাবোধ, সাহায্য সহযোগীতা, সহানুভুতি ও সহমর্মিতার সেতু বন্ধন সৃষ্টি হবে। ভুলে যাবে সকল হিংসাবিদ্বেষ, অভাব অনাটন, অসচ্ছলতা, দরিদ্রতার কষ্ট ও যন্ত্রনা। ভ্রাতৃত্ববোধে আবদ্ধ থাকবে সব মানুষ। তাই ইসলামী আহকাম সমূহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন আহকাম হচ্ছে যাকাত।
পবিত্র কুরআনে সালাতের পাশাপাশি যাকাতের বর্ণনা রয়েছে। সালাত হচ্ছে শারীরিক ইবাদত আর যাকাত হচ্ছে আর্থিক ইবাদত। মানুষ বেচে থাকতে হলে সম্পদের যেমন প্রয়োজন তেমনি আত্মিক পরিশুদ্ধতার জন্য সম্পদের ইবাদতও অতিব গুরুত্বপূর্ন ফরজে আইন। যা অস্বীকার করলে কাফির হয়ে যাবে। আর এই ফরজিয়াত আদায় না করলে ফাসিক জালিম ও কবিরাহ গুনাহ্ এর অধিকারী হবে। যাকাত ইসলামী জীবন বিধানের অন্যতম মূল ভিত্তি। যাকাত আদায় করা প্রত্যেক অর্থ সম্পদের দিক দিয়ে সামার্থবান মুসলমানের উপর ফরজ।
যাকাত আরবি শব্দ, এর অর্থ পবিত্রতা লাভ করা, বৃদ্ধি পাওয়া, প্রাচুর্যতা, আধিক্যতা প্রশংসা করা, গুনকৃতন করা। ইসলামী শরয়ীয়াতে এর অর্থ জমহুর উলামাদের মতে- নেসাব পরিমান সম্পদ কারো ব্যক্তি মালিকানায় এক বছর থাকার পর তা থেকে নির্দিষ্ট আটটি খাতে ২.৫% হারে যে সম্পদ আদায় করা আল্লাহ তায়ালা ফরয করেছেন তাকেই যাকাত বলা হয়। বস্তুত যাকাত সম্পদ শালিদের সম্পদে আল্লাহর নির্ধারিত সেই ফরজ অংশ যা সম্পদও আত্মার পবিত্রতা অর্জন। সম্পদের ক্রমবৃদ্ধি সাধন, এবং সর্বোপরি আল্লাহর রহমত লাভের আশায় নির্ধারিত খাতে ব্যয় বন্ঠন করার জন্য দেয়া হয়।
যাকাত একদিকে যাকাত দাতার ধন সম্পদকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে, এর প্রবৃদ্ধির সাধন করে, অন্যদিকে দরিদ্রের আর্থিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে। যাকাতের প্রবৃদ্ধি ও পবিত্রতা কেবল ধন মালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং যাকাত দানকারীর মন মানসিকতা ও ধ্যান ধারনা পর্যন্ত তা পরিব্যপ্ত হয়। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত আদায় কর। তোমরা উত্তম কাজের যা কিছু পূর্বে প্রেরন করবে আল্লাহর নিকট তা পাবে। তোমরা যা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ তার দ্রষ্টা। (সূরা আল- বাকারা ২:১১০)
এখানে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, যাকাত গরীবের জন্য দান, অনুগ্রহ বা করুনা নয়। এটি কোন ঐচিছক বিষয় বা ইবাদত নয়। বরং ধনীদের যাকাত প্রদান যেমন অধিকার তেমনি গরীবের জন্যেও নেয্য প্রাপ্য অধিকার। ইমাম নববী বলেছেন- যাকাত দ্বিতীয় হিজরীতে মদীনায় ফরজ হয়েছে।
যাকাত কার উপর ফরজঃ ইসলামী আইনবীদগণের মতে যাকাত কেবলমাত্র মুসলিম, স্বাধীন, পূর্নবয়স্ক, নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক এর উপর যাকাত আদায় করা ফরজ।
লেখা: মাওলানা মোহাম্মদ আমির হোসেন তালুকদার, অধ্যক্ষ, কাউনিয়া বালিকা আলিম মডেল মাদ্রাসা, বরিশাল।
চলবে ...
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।