ঝিনাইদহের চিত্রা নদীর দখল ও দুষণ রোধে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। চিত্রা নদীকে দখলমুক্ত করতে এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পুনরুদ্ধারে ইতিমধ্যেই ৯৪টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে এসব অবৈধ স্থাপনা ও পুকুর উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক সূত্র জানিয়েছে, চিত্রা নদীর ১৭১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মধ্যে ঝিনাইদহ অংশে ৫৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে দখলদারি। নদীর দু’ধারে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ স্থাপনা, পুকুর ও দোকানপাট। এসব দখলদারির কারণে এক সময়ের প্রমত্তা চিত্রা নদী এখন মৃতপ্রায়। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস জানান, চিত্রা নদীর ৩০ কিলোমিটারে ৯৪টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পুকুর, বাজার, দোকান, ঝুলন্ত দোকান এবং মুরগির খামার।
উল্লেখযোগ্যভাবে, কালীগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীর তীরে গড়ে উঠেছে এসব স্থাপনা। কালীগঞ্জ উপজেলার সিংদহ গ্রামে আটটি পুকুর কেটে মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালীরা। কোটচাঁদপুরের লক্ষিপুর বাজারে ১১টি এবং ধোপাবিলা গ্রামে ২১টি স্থাপনা নদী বক্ষে নির্মিত হয়েছে।
এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ঝিনাইদহের মানবাধিকার কর্মী অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান টুকু বলেন, "এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। সরকারের এ পদক্ষেপকে আমরা সাধুবাদ জানাই, কারণ নদী এবং পরিবেশ রক্ষা এখন অতীব জরুরি।" তিনি আরো বলেন, "এ ধরনের উচ্ছেদ অভিযান যদি সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, তাহলে নদীটির প্রাকৃতিক চেহারা ফিরে আসবে এবং পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা হবে।"
এদিকে, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস জানিয়েছেন, আগামী নতুন বছরের শুরুতেই এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। তিনি বলেন, "আমরা ইতিমধ্যে অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করেছি এবং প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছি।" তিনি আরো জানান, সঠিকভাবে নদী, খাল ও বিল দখলমুক্ত করলে শুধু ঝিনাইদহের মানুষই উপকৃত হবে না, দেশের পরিবেশ রক্ষায়ও এটি একটি বড় ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া, স্থানীয় জনগণকে সচেতন করতে আরো পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।