দেশের ব্যাংকগুলোতে টাকার সংকট থাকলেও এখন ডলারের সংকট নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার ২০শে অক্টোবর ২০২৪ ০২:৩৯ অপরাহ্ন
দেশের ব্যাংকগুলোতে টাকার সংকট থাকলেও এখন ডলারের সংকট নেই

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে। দেশ থেকে অর্থপাচার কমানো ও দুর্নীতি দমন করার ফলে ব্যাংকিং খাতে ডলারের সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। যেখানে আগে ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট ছিল, বর্তমানে আন্তব্যাংকে ডলারের সহজ প্রাপ্যতা অর্থনীতিতে স্বস্তি এনে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, রিজার্ভ থেকে ডলার না নিয়েও, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকা বকেয়া প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে পেরেছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের মতে, ব্যাংকগুলোতে বর্তমানে ডলারের সংকট নেই। আগে যেসব প্রতিষ্ঠান বকেয়া পরিশোধে সমস্যার মুখে পড়ছিল, তারা এখন নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী আন্তব্যাংক থেকে ডলার সংগ্রহ করে পরিশোধ করতে পারছে। গভর্নর উল্লেখ করেন, আগে ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংককে রিজার্ভ থেকে ডলার দিতে হতো, তবে গত দুই মাসে তা করতে হয়নি। ইসলামী ব্যাংকের মতো ব্যাংকগুলোতে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের মাধ্যমে আসা ডলারের জোগানও পরিস্থিতি সহজ করতে সহায়ক হয়েছে।


ড. আহসান এইচ মনসুর আরও জানান, গত দুই মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্তত দেড় বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে আদানি, কাফকো, শেভরনসহ কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে। যদিও এখনো ৭০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে, যা অচিরেই পরিশোধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মাধ্যমে অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করছেন গভর্নর, বিশেষ করে ডলার সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার ফলে আর্থিক ব্যবস্থাপনার চাপ অনেকটাই কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


গভর্নর মনে করেন, ডলার সংকট কাটাতে আন্তব্যাংকে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধির মূল কারণ হলো অর্থপাচার ঠেকানো এবং দুর্নীতির মাত্রা কমানো। প্রবাসী আয় এবং রপ্তানি আয়ের ফলে ব্যাংকগুলোতে ডলারের মজুত বেড়েছে, যা বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছে। এছাড়া, দেশের মুদ্রা টাকার প্রতি এখন মানুষের আগ্রহ বেশি। ডলারের তুলনায় টাকায় উচ্চ সুদের হার এবং মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণ আর্থিক কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।


গভর্নর আশা করছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই বাকি সব বকেয়া পরিশোধের মাধ্যমে অর্থনীতির আরও ইতিবাচক প্রবাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর পাশাপাশি, বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে আরও ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণ সংগ্রহের চেষ্টা করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।