শোলাকিয়ায় ১৯৮তম ঈদ জামাত সম্পন্ন

নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতে দেশ, জাতি ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের জন্য দোয়া করা হয় এবং মুসলমানদের ঐক্য ও নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করা হয়। বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম নির্বিঘ্ন করতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ও সেনাবাহিনী মাঠ ও আশপাশের এলাকায় টহল দেয়। নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠের ভেতরে ৬৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয় এবং ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়।  

২০১৬ সালের জঙ্গি হামলার পর থেকে শোলাকিয়ার নিরাপত্তা আরও কঠোর করা হয়। এবারও চার স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়, যেখানে ১১শ' পুলিশ সদস্য, বিজিবি, র‌্যাব ও আনসার মোতায়েন ছিল। ঢাকা থেকে বিশেষ বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল পাঠানো হয়। ফায়ার ব্রিগেড, অ্যাম্বুলেন্স, মেডিক্যাল টিম ও পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম মাঠের চারপাশে অবস্থান নেয়। মুসল্লিদের জামাতে অংশ নিতে বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট অতিক্রম করতে হয়েছে।  

দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের সুবিধার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছিল। ভোরে ভৈরব ও ময়মনসিংহ থেকে ট্রেন দুটি ছেড়ে আসে এবং নামাজ শেষে দুপুরে ফেরত যায়। মাঠে প্রবেশের সময় মুসল্লিদের কেবল জায়নামাজ ও মোবাইল নিয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। ঈদের আগের দিন থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা কিশোরগঞ্জে আসতে থাকেন, যাদের থাকার ব্যবস্থাও করা হয়।  

ঐতিহ্য অনুসারে জামাত শুরুর ১৫ মিনিট আগে প্রথম তিনটি, ১০ মিনিট আগে দুটি এবং পাঁচ মিনিট আগে একটি শটগানের গুলি ছোঁড়েন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার। ১৭৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহ প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৮২৮ সালে প্রথম বৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। তখন সোয়া লাখ মুসল্লি অংশ নেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাতেও লাখো মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে।