আল্লাহ অহংকারীদের পছন্দ করেন না , কেন তাঁর বিস্তারিত বিশ্লেষণ !

নিজস্ব প্রতিবেদক
হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী- বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ
প্রকাশিত: বুধবার ১৬ই অক্টোবর ২০২৪ ১২:২৩ অপরাহ্ন
আল্লাহ অহংকারীদের পছন্দ করেন না , কেন তাঁর বিস্তারিত বিশ্লেষণ !

অহংকার মানব জীবনের একটি ভয়াবহ অসুখ, যা মানুষকে পথভ্রষ্ট করে। ইসলামের শিক্ষায় আল্লাহ তায়ালা অহংকারীদের পছন্দ করেন না। সূরা আন-নাহলে (আয়াত ২৩) এ বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা এসেছে। ইতিহাসের পাতায় দেখা যায়, অহংকারের ফলস্বরূপ কতিপয় জাতির পতন ঘটেছে। এর মধ্যে টাইটানিক জাহাজের ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।


টাইটানিক, এক সময়ের সবচেয়ে বিলাসবহুল জাহাজ, নির্মাতাদের অহঙ্কারে ভরা ছিল। তারা বিশ্বাস করেছিল যে, এটি কখনো ডুববে না, এমনকি আল্লাহও চাইলে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের অহংকারের জবাব দিলেন। জাহাজটি প্রথম যাত্রায়ই সমুদ্রের গভীরে তলিয়ে যায়, এবং সে সময়ের মানবতার অহংকারকে লজ্জায় ফেলেছিল।


আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা যুগে যুগে অহংকারীদের শাস্তি দিয়েছেন। ফেরাউন, নমরুদ, আবু জাহেল—এইসব দাম্ভিক শাসকদের পরিণতি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আল্লাহর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানো কতটা বিপজ্জনক। তাঁরা আল্লাহর নির্দেশ উপেক্ষা করে নিজেদের শক্তি ও ক্ষমতার ওপর অহঙ্কার করেছিলেন, যার ফলে তাঁদের চরম পতন ঘটেছিল।


ইসলামের দৃষ্টিতে, অহংকার মানে কেবল নিজের অবজ্ঞা নয়; এটি অন্যদের প্রতি অবজ্ঞার প্রকাশ। মহানবী (সা.) বলেছেন, যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না (মুসলিম শরিফ)। আমাদের উচিত নিজেদের বিনয়ী রাখা এবং আল্লাহর হুকুম পালন করা।


বিনয়ী মানুষেরা সমাজে সম্মান অর্জন করে এবং আল্লাহর কাছে প্রিয় হয়। যিনি তাকওয়ার গুণাবলির মাধ্যমে সম্মান অর্জন করেন, তিনিই সত্যিকারের সফল। তাই অহংকার থেকে মুক্ত হয়ে বিনয়ের পথে চলা প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য। 


অতএব, টাইটানিকের দুঃখজনক ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয় যে, আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাসী হয়ে অহংকারের পথ মাড়ালে ফলস্বরূপ ভেঙে পড়া ছাড়া আর কিছুই হবে না। সুতরাং আমাদের উচিত অহংকার ত্যাগ করে আল্লাহর নিকট ফিরে আসা এবং বিনয়ী জীবনযাপন করা।